খুলনা থেকে সবজি যাচ্ছে ইউরোপে

বাণিজ্যিকভাবে এই প্রথম খুলনা থেকে ইতালি ও ইংল্যান্ডে সবজি রপ্তানি শুরু হচ্ছে
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

বাণিজ্যিকভাবে এই প্রথম খুলনা থেকে ইতালি ও ইংল্যান্ডে সবজি রপ্তানি শুরু হচ্ছে। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভিলেজ সুপার মার্কেট থেকে এসব সবজি পাঠানো হবে। আজ শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব সবজি পাঠানো হচ্ছে। এসব সবজির মধ্যে আছে পেঁপে, পটোল, কচুর লতি ও কাঁচকলা।

জানা গেছে, প্রথম চালানে এক মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি করা হচ্ছে। এনএইচবি করপোরেশন ও আরআর এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব সবজি রপ্তানি করছে। এনআইচবি করপোরেশন ইতালি এবং আরআর এন্টারপ্রাইজ ইংল্যান্ডে সবজি রপ্তানি করবে।

এসব সবজির মধ্যে আছে পেঁপে, পটোল, কচুর লতি ও কাঁচকলা।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

সবজি রপ্তানিতে সার্বিক সহযোগিতা করছে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আর আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে সফল নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেটের তত্ত্বাবধায়ক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সফল’ প্রকল্পের আওতায় খুলনা ও যশোরে প্রায় দেড় লাখ কৃষক নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন। সেই সবজি প্রক্রিয়াকরণের জন্য ডাচ সরকারের আর্থিক সহায়তায় ডুমুরিয়ায় ভিলেজ সুপার মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেখান থেকে এ বছর ১২০ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তার অংশ হিসেবে এই চালানে ইতালি ও লন্ডনে এক টন সবজি পাঠানো হচ্ছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সবজি রপ্তানি হয়। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে সবজি রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মূলত কোভিড পরিস্থিতির কারণেই রপ্তানি কমেছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন। তবে শুধু সবজিই নয়, কোভিডের কারণে গত বছর সামগ্রিকভাবেই রপ্তানি কমে যায়।

মো. শহিদুল ইসলাম আরও বলেন, নিরাপদ সবজি উৎপাদন করতে যে ধরনের খাটুনির প্রয়োজন হয়, সে অনুযায়ী দাম পান না কৃষকেরা। একবার রপ্তানির দ্বার খুলে গেলে কৃষকদের সেই সমস্যা আর থাকবে না।

সারা বিশ্বেই মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে। বাড়ছে ফল ও সবজি খাওয়ার প্রবণতা। সে কারণে সবজি রপ্তানির সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তবে সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে সঠিকভাবে উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কৃষকদের পক্ষে এসব নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বিশ্লেষকদের মত, এসব ক্ষেত্রে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসা উচিত।

এদিকে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ডুমুরিয়া সবজি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। রপ্তানিকারকদের নির্দেশনা অনুযায়ী সবজি প্রক্রিয়াজাত করার পর রপ্তানি করা হচ্ছে। এটি সফল হলে খুলনার কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে।