গুদামে জায়গার সংকট, খালাস হচ্ছে না পণ্য

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের ১ নম্বর গুদামের সামনে জিনসের কাপড়বোঝাই (ডেনিম রোল) দুটি ট্রাক আট দিন ধরে অপেক্ষায় ছিল। ট্রাক দুটির চালক মাহেন্দ্র কুমার ও প্রভুকান্ত কুমার আট দিনেও পণ্য খালাসের অনুমতি পাননি। মাহেন্দ্র ও প্রভুকান্তের মতো ৫০ চালককে ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবোঝাই ট্রাক নিয়ে এক সপ্তাহের বেশি অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে খালাসের জন্য।

মাহেন্দ্র কুমার ও প্রভুকান্ত কুমারের সঙ্গে কথা হয় গত সপ্তাহে। তাঁরা জানান, ১৫ দিন আগে ভারতের গুজরাট থেকে জিনসের কাপড়বোঝাই ট্রাক নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। সাত দিন পর বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছান তাঁরা। এরপর আট দিন ধরে পণ্য খালাসের জন্য বেনাপোলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কারণ, গুদামে পণ্য খালাসের জায়গা ও অনুমতি পাননি তাঁরা। এ অবস্থায় তাঁদের থাকা-খাওয়া সবই ছিল ট্রাকের ভেতর।

বেনাপোল বন্দরের ১ নম্বর গুদামের ইনচার্জ মেহেদি হাসান জানান, বর্তমানে গুদামে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য রয়েছে। তাই নতুন করে পণ্য রাখার জায়গার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, শুধু ১ নম্বর গুদাম নয়, এই স্থলবন্দরের ৩২টি গুদাম ও ১০টি ইয়ার্ডের কমবেশি একই অবস্থা। তীব্র পণ্যজট চলছে। বর্তমানে বেনাপোল বন্দরের গুদামের ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি পণ্য আমদানি হচ্ছে। তাই এখনই বন্দর সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সি অ্যান্ড এফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান জানান, আমদানি করা পণ্যের ট্রাক বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকলে, আমদানিকারককে প্রতিদিনের জন্য প্রতি ট্রাকে দুই হাজার টাকা মাশুল গুনতে হয়। এ ছাড়া পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ারও শঙ্কা থাকে। আবার কাঁচামাল আটকে থাকলে পণ্য রপ্তানিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বন্দরের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে বেনাপোল বন্দরের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, স্থলবন্দরে পণ্যের ধারণক্ষমতা ৫১ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু সেখানে দ্বিগুণের বেশি পণ্য রাখা হচ্ছে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে আবার গতি ফেরায়, আমদানি-রপ্তানিও বেড়েছে। এ কারণে পণ্য রাখার স্থান–সংকুলান করা যাচ্ছে না।

বেনাপোল বাইপাস সড়কের পাশের ছোট আঁচড়া গ্রামে ১০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বন্দর এলাকার আমদানি-রপ্তানি ফটকের পাশে ২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আরও ১৬ একর জায়গা অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে।