জাহাজের চলাচল পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ভেসেলফাইন্ডারে দেখা যায়, ইন্দোনেশিয়ার লুবুক গোয়ং বন্দর থেকে জাহাজটি ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। এক দিন পর ইন্দোনেশিয়ার জলসীমা থেকে পাম তেলবাহী দুটি জাহাজ আটক করেছিল দেশটির নৌবাহিনী।
জাহাজটির স্থানীয় প্রতিনিধি মোহাম্মদী ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক কাজী আবু নাঈম প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজটি ৬ মে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের অন্তত ২০ হাজার টন পাম তেল আমদানি আটকে গেছে বলে আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে। নিষেধাজ্ঞার আগে এই তেল আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছিল। তবে কাদের আমদানি করা পাম তেল আটকে গেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইন্দোনেশিয়ার দেওয়া নিষেধাজ্ঞার আগে এপ্রিল মাসে (১-২৮) ১২ কোটি লিটার পাম তেল আমদানি করেছেন এ দেশের ব্যবসায়ীরা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ার দেওয়া নিষেধাজ্ঞার আগে এপ্রিল মাসে (১-২৮) ১২ কোটি লিটার পাম তেল আমদানি করেছেন এ দেশের ব্যবসায়ীরা। আমদানির পর এই তেল রাখা হয় কাস্টমস বন্ডেন্ড ট্যাংক টার্মিনালে। একই সময়ে পরিশোধনের জন্য কারখানায় নেওয়া হয়েছে ১৩ কোটি লিটার পাম তেল। ট্যাংক টার্মিনালে আগের মজুত থাকায় আমদানির চেয়ে খালাসের হার ছিল বেশি।
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৩ লাখ টন পাম তেল আমদানি হয়। যার ৯০ শতাংশ আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। মালয়েশিয়ার চেয়ে তুলনামূলক কম দামের কারণেই ইন্দোনেশিয়া থেকে বেশি পাম তেল আমদানি করা হয়। মালয়েশিয়া থেকে আমদানি হয় ১০ শতাংশ।
আমদানির জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সরকারের দিক থেকেও অভয় দেওয়া উচিত, যাতে আমদানি অব্যাহত থাকে।মোস্তফা হায়দার,পরিচালক, টি কে গ্রুপ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় চাপ পড়েছিল সয়াবিন ও পাম তেলের ওপর। আর পাম তেলের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যায়।
ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি বন্ধ করায় এখন বাংলাদেশের মতো ভারত ও চীন মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানিতে ঝুঁকছে। তবে দেশটির পক্ষে এই বিশাল চাহিদার চাপ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাতে দাম দিয়েও পাম তেল পাওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে এ দেশের আমদানিকারকদের সামনে।
জানতে চাইলে টি কে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমদানির জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সরকারের দিক থেকেও অভয় দেওয়া উচিত, যাতে আমদানি অব্যাহত থাকে।’