রপ্তানি আয় তিন বছরে দ্বিগুণ করার লক্ষ্য

তিন অর্থবছরের মধ্যে রপ্তানি আয় বেড়ে আট হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে—এমন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নতুন রপ্তানি নীতির খসড়া অনুমোদন।

আ হ ম মুস্তফা কামাল

২০২১ সালের মধ্যে ৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে জাতীয় রপ্তানি নীতি (২০১৮-২১) প্রণয়ন করেছিল সরকার। কিন্তু রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য হচ্ছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে এসে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে অর্ধেকের একটু বেশি, অর্থাৎ ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলার।

এবার আট হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নতুন রপ্তানি নীতির (২০২১-২৪) খসড়া অনুমোদন করেছে অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জন করতে হলে গত অর্থবছর থেকে পরবর্তী তিন অর্থবছরে রপ্তানি আয় বাড়িয়ে এখনকার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি করতে হবে। গতকাল বুধবার ভার্চু৵য়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে রপ্তানি নীতির খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন রপ্তানি নীতিতে সম্ভাবনাময় কিছু নতুন পণ্য ও সেবা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে কীভাবে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব, সেটিও রয়েছে নতুন নীতিতে। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ–পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কর্মকৌশল প্রণয়নের বিশদ বিবরণও রয়েছে এতে।

ভবিষ্যতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) ও ফ্রিল্যান্সিংসহ সেবা খাতে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন রপ্তানি নীতিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ধারণা জোরদারের কথা বলা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া খাতগুলো হচ্ছে—অধিক মূল্য সংযোজিত তৈরি পোশাক ও ডেনিম; কৃত্রিম তন্তু, গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ, ওষুধ, প্লাস্টিক, জুতা, পাটজাত পণ্য, কৃষিপণ্য, হালকা প্রকৌশল, আসবাব ইত্যাদি।

বিশেষ উন্নয়নমূলক খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে—ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস, সিরামিক, হিমায়িত মৎস্য, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, রবার, রেশম, হস্ত ও কারুপণ্য ইত্যাদি। আর রপ্তানি–নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় রয়েছে—পাটবীজ, চাল (সুগন্ধি ছাড়া), আগ্নেয়াস্ত্র, পুরাতাত্ত্বিক বস্তু, মনুষ্য কঙ্কাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ইত্যাদি।

ক্রয় কমিটির সভা

এদিকে সরকারি ক্রয়–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাতটি, বিদ্যুৎ বিভাগের তিনটি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দুটি এবং আইসিটি বিভাগের একটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এসব প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণের অংশ ১ হাজার ২০৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

পাঁচ বছর ধরে অনুমোদন না পাওয়া আট জেলায় হাইটেক পার্কের জন্য ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে গতকাল।

এদিকে বিশ্ববাজারে নিম্নমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। আমাদের পর্যায়ে এলে আপনাদের জানাতে পারব।’