রেলপথে ভারত থেকে এল গম, অপেক্ষায় পেঁয়াজ, চাল ও পাথরের ওয়াগন
ভারতের সঙ্গে স্থলপথে গতকাল সোমবার থেকে যাত্রী চলাচল ১৪ দিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেলেও পণ্য আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বন্ধের প্রথম দিন গতকাল সন্ধ্যায় ভারত থেকে বেসরকারি উদ্যোগে রেলপথে ২ হাজার ৪২৫ মেট্রিক টন গমের একটি চালান চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দরে এসে পৌঁছে। এ ছাড়া পেঁয়াজ, চাল ও পাথরের তিনটি বড় চালান প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
বন্দরসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যশোরের নওয়াপাড়ার আবদুস সালাম গমের আমদানিকারক। শুল্ক বিভাগ (কাস্টমস), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইং (কোয়ারেন্টিন) এবং ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিংয়ের (সিঅ্যান্ডএফ) আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ গমভর্তি ওয়াগনগুলো নওয়াপাড়ায় পাঠানো হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতে গত কয়েক দিনে করোনা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হওয়ায় এবং সেখানে শনাক্ত করোনার নতুন স্ট্রেইন প্রবেশ ও ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যাত্রী চলাচল গতকাল থেকে বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধের প্রথম দিন সন্ধ্যায় রেলপথে ৪২টি ওয়াগনে ভর্তি ২ হাজার ৪২৫ মেট্রিক টন গমের একটি চালান চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দরে এসে পৌঁছায়, যা বন্দর থেকে ছাড়ের অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া পেঁয়াজ, চাল ও পাথরের তিনটি বড় চালান (প্রতিটি পণ্যের ৪২টি ওয়াগন হিসেবে ১২৬ ওয়াগন) প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাট রেলস্টেশনে অপেক্ষা করছে। সবুজসংকেত পেলে আজ সন্ধ্যা নাগাদ সীমান্ত পার হয়ে দর্শনায় পৌঁছাতে পারে। পেঁয়াজ ও চাল বেসরকারি উদ্যোগে এবং পাথরের চালানটি পদ্মা সেতুর জন্য আমদানি করা হচ্ছে।
দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের তত্ত্বাবধায়ক মীর মো. লিয়াকত আলী জানান, করোনার সময়ে পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে সাধারণ লোকজন আসার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে আসা প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রেনের তিনজন ক্রু (চালক, চালকের সহকারী ও একজন গার্ড বা পরিচালক) এসে থাকেন। চালক ও তাঁর সহকারী ট্রেনের ইঞ্জিনেই অবস্থান করেন। পণ্যের চালান বুঝিয়ে দিতে কিছু আনুষ্ঠানিকতার জন্য গার্ড বা পরিচালককে নামতে হয়। এই আনুষ্ঠানিকতা সারতে ভারতীয় ট্রেনের সঙ্গে আসা তিনজনকে ৪৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা অবস্থান করার প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি অনুসরণ করা হয়।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল প্রথম আলোকে জানান, পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে আসা চালক-পরিচালকদের সীমান্তের শূন্য রেখায় ট্রেন থামিয়ে স্ক্রিনিং করা হয়ে থাকে। এ সময় ট্রেনটির চালক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, সহকারী চালক শিবব্রত চৌধুরী ও পরিচালক প্রদীপ শংকরের স্ক্রিনিং শেষে ব্যক্তিগত বিষয় জেনে ঝুঁকিমুক্ত নিশ্চিত হওয়ার পর কেবল বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়। তা ছাড়া দর্শনা বন্দরে পৌঁছানোর পর ভারতীয় ট্রেনের পরিচালক যেখানে যেখানে যান এবং অবস্থান করেন, সে জায়গাগুলো সঙ্গে সঙ্গে জীবাণুমুক্ত করা হয়।