১০০ টাকা খরচেই চামড়ার পচন রোধ করা সম্ভব

মহিউদ্দিন আহমেদ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন

প্রচণ্ড গরমের কারণে কোরবানির পর চার ঘণ্টার মধ্যে পশুর চামড়ায় লবণ দেওয়া না হলে তা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে নষ্ট হতে শুরু করবে। তাই যিনি কোরবানি দেবেন, তাঁকেই চামড়া সংরক্ষণের প্রাথমিক দায়িত্ব নিতে হবে। আর এ জন্য খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হবে না। মাঝারি আকারের একটি গরুর চামড়া সংরক্ষণে ৮-১০ কেজি লবণ লাগে। তাতে খরচ ১০০ টাকার কাছাকাছি।

কোরবানির পর লবণ দিলে সেই চামড়ার মান নষ্ট হয় না, বরং দেড় মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব। চামড়া দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী সম্পদ। তাই চামড়া নষ্ট করার অধিকার কারও নেই। আরেকটি বিষয়, কোরবানির পর চামড়ায় লবণ দিলে তাড়াহুড়া করে বিক্রির জন্য মৌসুমি ব্যবসায়ী বা আড়তদারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। ধীরে সুস্থে ভালো দামে চামড়া বিক্রি করা যাবে। তাই সবার কাছে অনুরোধ, ট্যানারিমালিকদের দোষ না দিয়ে কোরবানিদাতা হিসেবে আপনি নিজেই চামড়া সংরক্ষণের প্রাথমিক কাজটি করুন।

সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়াশিল্প নগর প্রস্তুত না হওয়ার আগেই ২০১৭ সালে আমাদের জোর করে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরাতে বাধ্য করেছে বিসিক। আবার হাজারীবাগে ট্যানারিমালিকদের জমির ওপর রেড জোন আরোপ করে রেখেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এতে হাজারীবাগের সম্পত্তি বন্ধক রেখে ট্যানারিমালিকেরা যে ঋণ নিয়েছিলেন, তার ওপর সুদ চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। ইতিমধ্যে ট্যানারিমালিকদের ঘাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা সুদের বোঝা চেপেছে। উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্সের সভার সুপারিশ সত্ত্বেও রাজউক গভীর ঘুমের মধ্যে রয়েছে। হাজারীবাগের সম্পত্তি অবমুক্ত না করায় ঋণের বোঝা থেকে বের হতে পারছেন না মালিকেরা। ফলে হেমায়েতপুরে নিজেদের কারখানায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগও করতে পারছেন না তাঁরা।

অপ্রস্তুত চামড়াশিল্প নগরীতে উৎপাদন শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি), কঠিন বর্জ্য (সলিড ওয়েস্ট) ব্যবস্থাপনা এবং ক্রোম রিকভারি ইউনিটের কাজ অসমাপ্ত। সিইটিপির কাজ শেষ না করেই চীনা ঠিকাদার চলে গেছে। বুয়েটের পরামর্শক দলও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। বর্তমানে সিইটিপি চললেও অনেকটা যেন অপূর্ণাঙ্গ অবস্থায় রয়েছে। এটির অবকাঠামো আধুনিকায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান শিগগিরই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন।