২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে রানার অটোমোবাইলস

অটোমোবাইল কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটনের দাবি করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। তারা বলছে, প্রতিষ্ঠানটি গত পাঁচ বছরে এই ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্রেতার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে গত ৩০ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালান ভ্যাট গোয়েন্দারা। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. হারুন অর রশিদ। এ সময় রানার অটোমোবাইলসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) শনদ দত্ত উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানকালে ভ্যাট গোয়েন্দারা প্রতিষ্ঠানটির মাসিক ভ্যাট ও আয়-ব্যয়ের নথিতে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার প্রমাণ পান। এ ছাড়া নথিতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফাঁকির আলামত থাকায় প্রতিষ্ঠানটির আরও কিছু নথিপত্র জব্দ করেন গোয়েন্দারা।

পরে এসব নথিপত্র তদন্ত করে গোয়েন্দারা দেখতে পান, রানার অটোমোবাইলস ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময়ে ১ হাজার ৮৩৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮১ হাজার ৮১৭ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি মাসিক রিটার্নে মোট ১ হাজার ৭৬৪ কোটি ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৫৬ টাকা বিক্রির তথ্য দিয়েছে; অর্থাৎ আয়কর রিটার্নের ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ কোটি ৪৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বিক্রির তথ্য গোপন করা হয়েছে।

ফলে প্রায় ১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ২৭৬ টাকার ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে বলে জানান ভ্যাট গোয়েন্দারা। এর সঙ্গে ভ্যাট আইন অনুসারে প্রতি মাসে ২ শতাংশ হারে প্রায় ৫ কোটি ২৬ লাখ ৯ হাজার ৩৯৫ টাকা সুদ যোগ হওয়ায় মোট ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬৭১ টাকার ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দারা।

তদন্ত শেষে রানার অটোমোবাইলসের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রানার অটোমোবাইলসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) শনদ দত্ত লিখিত বক্তব্যে বলেন, ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র আমরা ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা অধিদপ্তরে জমা দিয়েছি। তবে আমরা দেশের প্রচলিত নিয়মনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা সব ব্যবসায়িক কার্যক্রম সরকারি নিয়মনীতি মেনেই পরিচালনা করে আসছি। তাই আশা করছি, আমাদের নথিপত্র পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রকৃত সত্য প্রমাণ করতে পারব।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার আমদানি করে করপোরেট গ্রাহক, ডিলার ও নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশীয় বাজারে বিক্রি করে থাকে।