ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পাওয়ার কথা ছিল শ্রীলঙ্কার। কিন্তু ভারতের ইকোনমিক টাইমসের এক সংবাদে বলা হয়েছে, আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা এ ঋণ না-ও পেতে পারে।
বলা হয়েছে, ডিসেম্বরে এ ঋণ না পেলে ২০২৩ সালের মার্চের আগে শ্রীলঙ্কার ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আটটি সমান কিস্তিতে শ্রীলঙ্কার মোট ২৯০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার কথা।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। মূলত ২০২০ সালে করোনা মহামারির জেরে বিপর্যয় আরও মারাত্মক হয়েছে। ওই সময় পশ্চিমা দেশগুলোতে কর্মরত অনেক শ্রীলঙ্কান কর্মী চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হন। দেশের মধ্যেও সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করে। তখন অনেক গার্মেন্টস কারখানা, চা-বাগান বন্ধ হয়ে যায়। কাজ হারিয়ে ঘরে বেকার বসে থাকে লাখ লাখ শ্রমিক। বেড়ে যায় বেকারত্বের হার। মহামারিতে সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খায় সরকার। সংক্রমণের ধাক্কায় পর্যটন খাত বন্ধ হয়ে গেলে সংকট আরও তীব্র হয়। সব মিলিয়ে, রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের মতো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাতগুলো বড় ধরনের ধাক্কা খায়।
এ ছাড়া গত এক দশকে বিপুল ঋণ নিয়ে অনেক অবকাঠামো প্রকল্প করেছে শ্রীলঙ্কা, যার অনেকগুলোই কাজে আসেনি। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কার নেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ ৯৭ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫১ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারই বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া। এতে জাপান, চীন, ভারত, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে নেওয়া দ্বিপক্ষীয় ঋণের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎস থেকে নেওয়া সার্বভৌম ঋণ রয়েছে।
গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে জানায়, তারা আপাতত বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। এরপর নতুন ঋণ পেতে তৎপরতা শুরু করে দেশটির সরকার। তার অংশ হিসেবে আইএমএফের সঙ্গে ঋণ আলোচনা শুরু করে তারা। কিন্তু সেই ঋণও তারা আপাতত পাচ্ছে না বলেই ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে।