ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বাড়তে পারে

বাজার স্থিতিশীল রাখতে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা চেয়ে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ভোজ্য তেল
ফাইল ছবি

ভোজ্যতেলের ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আরও তিন মাস বাড়তে পারে। দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন করে ভাবছে।

আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থানীয় ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখা হতে পারে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে দুই-এক দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

এক দফা সময় বাড়ানোর পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোজ্যতেলের ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা চলতি ২০২২–২৩ অর্থবছরের পুরো সময় ভ্যাট সুবিধা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন।

যদি ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে বর্তমান বাজারদর থেকে অন্তত ১২ শতাংশ দাম বাড়তে পারে।
সফিউল আথহার তাসলিম, পরিচালক, টি কে গ্রুপ

এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার বিষয়ে এনবিআর নীতিগতভাবে সম্মত। তবে ডলারের সংকট ও আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা পর্যালোচনা করা হবে। সে ক্ষেত্রে আপাতত আরেক দফায় কয়েক মাসের জন্য ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা রাখা হতে পারে।

গত মার্চে স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে এ দাম লিটারপ্রতি ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৯২ টাকা। সরকার ভোজ্যতেলের দাম ঠিক করে দেয়।

গত ২০ সেপ্টেম্বর ভোজ্যতেলের ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল রাখার অনুরোধ জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত পাম তেলের দাম কিছুটা কমলেও ডলারের দাম বৃদ্ধির (আগে ১ ডলার সমান ৮৬ টাকার স্থলে বর্তমানে ১ ডলার সমান ১০৫ টাকা) কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের মূল্য আনুপাতিক হারে কমানো সম্ভব হচ্ছে না।

তাই স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ১ অক্টোবর থেকে বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ৩০ জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে টি কে গ্রুপের পরিচালক সফিউল আথহার তাসলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে যতটা দাম কমেছে, ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় হয়ে সমান হয়ে গেছে। এখন যদি ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে বর্তমান বাজারদর থেকে অন্তত ১২ শতাংশ দাম বাড়তে পারে।’

গত ১৪ মার্চ এনবিআর প্রজ্ঞাপন জারি করে সয়াবিন ও পাম তেলের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায় পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করে। এর দুই দিন পর আমদানি পর্যায়ে ভোজ্যতেল আমদানিতে আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। তখন এর মেয়াদ ঠিক করা হয় ৩০ জুন পর্যন্ত। পরে ৩ জুলাই মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এরপর এনবিআর আর মেয়াদ বাড়ানোর কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ টন স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়; বাকি ১৮ লাখ টন আমদানি করা হয়।