প্রাণ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানে তিন কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে আইএফসি

দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ গ্রুপের প্রাণ ডেইরি লিমিটেড ও হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো লিমিটেডে ৩০ মিলিয়ন বা ৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএফসি জানিয়েছে, বাংলাদেশে মার্কিন ডলারের ঘাটতির কারণে কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীল শিল্পপ্রতিষ্ঠান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বাস্তবতায় এ–জাতীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে আইএফসি বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইএফসি বলছে, দেশের খাদ্য ও পানীয় শিল্পে প্রাণ ডেইরি ও হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। লক্ষ্য হলো, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিল্পে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা ও অর্থনীতি শক্তিশালী করা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দেশে চলতি পুঁজি হিসেবে আইএফসির মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার এটাই প্রথম নজির। আইএফসি মনে করছে, এতে প্রতিষ্ঠান দুটির কার্যক্রম টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি রপ্তানি বৃদ্ধি ও ৩০ হাজার কর্মসংস্থান রক্ষা করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া নারীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে কর্মক্ষেত্রে যথাযথ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তা করবে আইএফসি।

খাদ্য ও পানীয় খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প দেশের মোট উৎপাদন খাতের প্রায় ১৩ শতাংশের সমপরিমাণ। শিল্প উৎপাদন খাতে যত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, তার ১৯ শতাংশ এই খাতে এবং এই খাতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার চক্রবৃদ্ধি হারের হিসাবে বার্ষিক ১২ শতাংশ। এই খাতে বিনিয়োগের যৌক্তিকতা হিসেবে আইএফসি এসব কথা বলেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, জ্বালানির উচ্চমূল্য ও বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। একই কারণে স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা বিনষ্ট হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ মেয়াদে আইএফসির এই মার্কিন ডলারে অর্থায়ন বৈদেশিক মুদ্রার প্রাপ্তি সহজ করবে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অর্থ বিভাগের পরিচালক উজমা চৌধুরী বলেন, নিট আমদানিকারক হিসেবে নিয়মিতভাবে মার্কিন ডলার পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে ডলার–সংকট চলছে, তাতে সময়মতো চলতি পুঁজি হিসেবে মার্কিন ডলার পাওয়া কঠিন। ডলারে এই বিনিয়োগ করে আইএফসি প্রাণ-আরএফএল গোষ্ঠীর দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

আইএফসির বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপাল অঞ্চলের প্রধান মার্টিন হল্টম্যান বলেন, ‘সংকটের সময় গ্রাহকদের সহায়তা করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে আইএফসি যেমন বিদেশি মুদ্রার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করবে, তেমনি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইএফসি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ৩৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে।