মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়ায় পঞ্চম স্থানে বাংলাদেশিরা

কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়াফাইল ছবি: এএফপি

মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়ায় বাংলাদেশিদের অবস্থান ওপরের দিকেই রয়েছে। দেশটির ‘মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম (এমএম২এইচ) কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের তালিকায় বাংলাদেশিদের অবস্থান পঞ্চম। চীন, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নাগরিকদের পরই আছেন বাংলাদেশিরা।

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়েছেন ৩ হাজার ৬০৪ জন বাংলাদেশি। মালয়েশিয়ার পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতিমন্ত্রী দাতুক সেরি টিয়ং কিং সিং সম্প্রতি দেশটির সংসদে এ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম মালয় মেইল।

সংসদে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে মন্ত্রী দাতুক সেরি টিয়ং জানান, ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় সক্রিয় ‘সেকেন্ড হোম’ পাসধারী ছিলেন ৫৬ হাজার ৬৬ জন। তাঁদের মধ্যে যেমন অংশগ্রহণকারী বা পার্টিসিপেন্ট পাসধারী আছেন, তেমনি নির্ভরশীল পাসধারীও রয়েছেন।

মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুসারে, মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়ায় সবার শীর্ষে আছেন চীনা নাগরিকেরা; এই সংখ্যা ২৪ হাজার ৭৬৫ জন। এরপর আছে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও বাংলাদেশের নাগরিকেরা। অস্ট্রেলিয়া থেকে ৯ হাজার ২৬৫ জন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৪ হাজার ৯৪০ জন এবং জাপান থেকে ৪ হাজার ৭৩৩ জন এমএম২এইচ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের আছেন ২ হাজার ২৩৪ জন। এ ছাড়া তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সহস্রাধিক এমএম২এইচ পাসধারী আছেন এই কর্মসূচিতে।

সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মালয়েশিয়া সরকার সেকেন্ড হোম কর্মসূচি পুনর্গঠন করে। তখন এটিকে তিন স্তরে বিভক্ত করা হয়। নতুন ব্যবস্থার আওতায় আবেদনকারীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করা হয়। তখন বলা হয়েছিল, এমএম২এইচ কর্মসূচিতে পরীক্ষামূলকভাবে এক বছর থাকতে হবে এবং পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এই কর্মসূচিতে সমন্বয় আনা হবে।

নতুন ব্যবস্থায় আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর ও তদূর্ধ্ব নির্ধারণ করা হয়।

মূলত আর্থিক সক্ষমতার ভিত্তিতে আবেদনকারীদের বিভক্ত করাই ছিল তিন স্তরবিশিষ্ট ব্যবস্থার প্রধান লক্ষ্য। এই তিন স্তর হলো প্লাটিনাম, গোল্ড ও সিলভার। প্লাটিনাম স্তরের আওতায় অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই ৫০ লাখ রিঙ্গিত, গোল্ড স্তরে ২০ লাখ ও সিলভার স্তরের অংশগ্রহণকারীদের ৫ লাখ রিঙ্গিত স্থায়ী আমানত থাকতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচিত সব স্তরের অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই বছরে মোট ৬০ দিন মালয়েশিয়ায় বসবাসের শর্ত পূরণ করতে হবে।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য এখন পর্যন্ত সামান্য সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু কানাডা ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের তথাকথিত সেকেন্ড হোম তৈরি করা, সিঙ্গাপুরের তারকা হোটেলের মালিকানা নেওয়া ও সুইস ব্যাংকে অর্থ রাখা—এমন বিষয় অনেক দিন ধরেই আলোচিত হচ্ছে। অভিযোগ আছে, দেশ থেকে পাচার করা অর্থ এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে বাংলাদেশিদের অবস্থান একসময় ছিল তৃতীয়; এবার পঞ্চম স্থানে নেমে এসেছে।

এর আগে সরকার নামমাত্র করের বিনিময়ে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনার সুযোগ দিয়েছিল। তবে সেই সুযোগ কেউ নেননি। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সরকারের উচিত আইনের প্রয়োগ বাড়িয়ে বিদেশে টাকা পাচার রোধ করা।