বিশেষ সুবিধার ঋণে রাখতে হবে বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি

ঋণ
প্রতীকী ছবি

বিশেষ সুবিধার আওতায় চলতি বছরে খেলাপির তালিকা থেকে যেসব ঋণ বাদ থাকছে, ওই ঋণের ওপর বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব ঋণের বিপরীতে ২ শতাংশ সাধারণ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে।

তবে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের ঋণের বিপরীতে ১ শতাংশ হারে সঞ্চিতি রাখা যাবে। এসব ঋণের বিপরীতে যে সুদ নগদ আদায় হবে, তা ব্যাংক আয় খাতে নিতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর ফলে গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যাংক যে সুদ পায়, তা তার আয় খাতে নেওয়া নিয়ে যে শর্ত ছিল, তা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঋণের ঝুঁকি বিবেচনায় মুনাফা থেকে বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার বাধ্যবাধকতা বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণগুলোর সম্ভাব্য আদায়–ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে ২০২২ সালের আরোপিত সুদ বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে। পুনঃ তফসিলকৃত ঋণ, পুনর্গঠন করা ঋণ ও এককালীন পরিশোধে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের বিপরীতে আরোপিত সুদ নগদ আদায় ছাড়া আয় খাতে নেওয়া যাবে না। সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের বিপরীতে অতিরিক্ত ২ শতাংশ সাধারণ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে। তবে সিএমএসএমই খাতের সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের বিপরীতে অতিরিক্ত ১ শতাংশ সাধারণ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করা যাবে।

চলতি বছরের জুনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বন্যার কারণে ঋণ পরিশোধে ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যবসায়ীদের চাপে ঢালাও সুবিধা না দিয়ে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়। জুনে দেওয়া সুবিধার শর্তগুলো ছিল, যাঁদের ঋণ গত ১ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত ছিল, শুধু তাঁরাই পরিশোধের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবেন। এ ক্ষেত্রে গত জুন ও সেপ্টেম্বর এবং চলতি ডিসেম্বর প্রান্তিকে বড় ঋণের যথাক্রমে ৫০, ৬০ ও ৭৫ শতাংশ জমা দিলেই কেউ আর খেলাপি হবেন না। অর্থাৎ পুরো কিস্তি না দিলেও ঋণখেলাপি হবেন না।

এদিকে গত সপ্তাহে দেওয়া সুবিধায় বলা হয়, বিশেষ সুবিধার ঋণের কিস্তির অর্ধেক পরিশোধ করলেই সেই ঋণকে খেলাপি করা যাবে না। এর মাধ্যমে মূলত খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ঠেকাতে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর ২০২০ সাল থেকে ঋণ পরিশোধে প্রায় দুই বছরের জন্য গণহারে সুবিধা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ওই সময়ে কেউ কোনো টাকা পরিশোধ না করলেও খেলাপি হননি।