গ্যাস, বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন কর কর্মকর্তারা

বিরোধ বা মামলা নেই, এমন বকেয়া করের ক্ষেত্রেই এ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন কর কর্মকর্তারা।

গ্যাস–বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন কর কর্মকর্তারা
প্রথম আলো

আপনি সরকারকে প্রাপ্য কর দেননি। এই করের টাকা বকেয়া পড়ে আছে, তাহলে আপনার জন্য দুঃসংবাদ আছে। আপনার যদি গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংযোগ থাকে, তাহলে তা বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন কর কর্মকর্তারা।

নতুন আয়কর আইনে কর বকেয়া থাকলে করদাতার গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্য পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা পেয়েছেন কর কর্মকর্তারা। শুধু বিরোধ নেই এমন বকেয়া করের ক্ষেত্রেই এ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন তাঁরা। নতুন আয়কর আইনের ২২১ ধারায় এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন আইনটি কার্যকর হবে। দুই বছর আগে এ ক্ষমতা আয়কর অধ্যাদেশে দেওয়া হয়। নতুন আইনেও তা রাখা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নতুন আয়কর আইন প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত একজন কর কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, কর কর্মকর্তারা করদাতার কর নথি মূল্যায়ন করে যদি কোনো করের গরমিল বা কর ফাঁকি পান, তাহলে ওই কর নিয়ে আপিল বা বিরোধ না থাকলে, তর আদায়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংযোগ বিচ্ছন্ন করতে পারবেন কর কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন

প্রক্রিয়া কী

বকেয়া কর পরিশোধের নোটিশ পাওয়ার পর তা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ওই করদাতা খেলাপি করদাতা হিসেবে গণ্য হবেন। করখেলাপি হওয়ার পর ওই করদাতার পরিষেবা বন্ধের উদ্যোগ নেবেন সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তা।

কোনো করদাতার কাছে বকেয়া কর পাওনা থাকলে ওই কর আদায়ে করদাতার গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্যান্য সেবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা বন্ধ করতে ওই সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নোটিশের মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কর কর্মকর্তার নোটিশ পাওয়ার ২১ দিনের মধ্যে ওই সব সেবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা বন্ধ করে দেবে।

একইভাবে বকেয়া কর পরিশোধের পর কর কার্যালয়ের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সেবা আবারও সংযোগ দেবে। করদাতার ওই এলাকায় বকেয়া পৌর কর আদায় বা স্থানীয় কর যেভাবে আদায় করা হয়, এনবিআরের বকেয়া করও সেভাবেই আদায় করতে হবে।

আরও পড়ুন

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে বকেয়া কর আদায়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মতো পরিষেবা বন্ধের ক্ষমতা কর কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়। কিন্তু গত দুই বছরে বকেয়া কর আদায়ে কোনো করদাতার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বর্তমানে ৮৭ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন, কিন্তু মাত্র ৩০ লাখ করদাতা বছর শেষে সম্পদ ও আয়ের হিসাব দিয়ে রিটার্ন দেন। কর আদায়ে এনবিআরকে উৎসে কর আদায়ে বেশি মনোযোগী হতে হয়। প্রায় ৮৫ শতাংশ কর আদায় উৎসে ও অগ্রিম কর থেকে আসে।