শিক্ষার্থী প্রমি চান–কর্মসংস্থান বাড়াতে যেন জোর দেওয়া হয়

প্রমি বিশ্বাস, শিক্ষার্থী

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষা খাতে বাজেটের মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশ পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

গত অর্থবছরে শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং মোট জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বরাদ্দ ছিল, যা অতি নগণ্য। দেশে শিক্ষার সার্বিক মান, জনশক্তির দক্ষতা, গবেষণা ও চাকরির সুযোগ—এসব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এসব ঘাটতি মেটাতে আসছে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। দেশে কর্মসংস্থানের অভাবে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি বেকারত্ব শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অস্থিরতার সৃষ্টি করে। সে জন্য বাজেটে দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ প্রদান ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ জোর দিতে হবে।

বর্তমানে উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে দরিদ্র পরিবারগুলো বেশি ভোগান্তিতে আছে। শিক্ষার প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন বই, ইউনিফর্ম, পরীক্ষার ফি না দিতে পারায় এসব পরিবারের অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে এ খাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ধরনের বৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পড়ানো হয়। কিন্তু অনেক স্থানেই কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও অনলাইন মাধ্যম ব্যবহারের সুযোগ সীমিত। যে কারণে ব্যবহারিক জ্ঞানে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে থাকছে। বাজেটে এটিও নজরে রাখতে হবে।

দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশে দিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। তবে সেগুলোর শিক্ষা ও গবেষণার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গবেষণায় বরাদ্দ কম থাকাই এর অন্যতম কারণ। এ ছাড়া বেশির ভাগ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময় ধরে পর্যাপ্ত আবাসন ও শ্রেণিকক্ষের সংকটে ভুগছে। এ বিষয়গুলোর আশু সমাধান প্রয়োজন।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে পারিবারিক খরচ বেড়ে গেছে। এটি পরোক্ষভাবে শিক্ষার্থীদের ওপরও প্রভাব ফেলছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তাদের খরচ বাড়িয়েছে, যা শিক্ষা ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করছে। তাই দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি নিরসনে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। বাজেটে শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতেও বরাদ্দ বাড়িয়ে তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

প্রমি বিশ্বাস, শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ,

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)।