পেনশনের অর্থ যাচ্ছে ট্রেজারি বন্ডে, বিনিয়োগ হয়েছে ১১ কোটি টাকার বেশি

সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ হচ্ছে। ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে এ উৎস নিরাপদ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ। মোট জমা পড়া অর্থ থেকে প্রাথমিকভাবে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এ বন্ডে। আজ রোববার এ বন্ডের বিপরীতে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৫ শতাংশ।

এ তথ্য জানিয়ে সচিবালয়ে আজ পেনশন তহবিলের অর্থ ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইজদানী খান, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য ও অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

এ সময় সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থে কেনা ট্রেজারি বন্ড আনুষ্ঠানিকভাবে অর্থমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৪ হাজার ৯২৮ জন চাঁদা দিয়েছেন। তাঁদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রগতি স্কিমে ৬ হাজার ৭১৯ জন ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টাকা, সুরক্ষা স্কিমে ৬ হাজার ৭৮ জন ৪ কোটি ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা, সমতা স্কিমে ১ হাজার ৬৮৩ জন ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকা এবং প্রবাস স্কিমে ৪৪৮ জন অংশগ্রহণকারী ১ কোটি ১৫ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন তহবিল’ শিরোনামের ব্যাংক হিসাবে পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী সবার জমা করা অর্থ জমা থাকবে। নিরাপদ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ উৎস হিসেবে বিনিয়োগের জন্য ট্রেজারি বন্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত যে সাড়া পেয়েছি, তা খারাপ নয়। তবে আমরা আরও সাড়া পাব। এ জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছি। যেমন প্রবাসীদের জন্য তিনটি চাঁদার হার করা হয়েছিল। দুই হাজার টাকার আরেকটি হার বাড়িয়ে এখন চারটি চাঁদার হার করা হয়েছে।’

কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা পড়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগের বিধিমালা হচ্ছে, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। শিগগির এ বিধিমালা জারি করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। মূলত ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী এবং বিশেষ ক্ষেত্রে ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও এ স্কিমে চাঁদা দিতে পারবেন। ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাওয়া যাবে।

চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা দেওয়ার আগেই মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তা নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেবল তাঁর জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাবে। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে পেনশনারের নমিনি পেনশন স্কিম গ্রহণকারীর ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার বাকি সময় পর্যন্ত পেনশন পাবেন।