ইউনিক মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১১ কোটি স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ

বিদ্যুৎ
প্রতীকী ছবি

বেসরকারি খাতের ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের ১১ কোটি টাকার স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। আর্থিক দলিল ও চুক্তির বিপরীতে আরোপ করা স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ মওকুফ করা হয়। এর মধ্যে আছে ভূমিসংক্রান্ত মালিকানা, ভূমি লিজ ও বিমাসংক্রান্ত স্ট্যাম্প। নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৫৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে।

১৯ ডিসেম্বর আরআইডি এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প অ্যাক্ট অনুসারে প্রদত্ত ক্ষমতায় এ মওকুফ করা। অবশ্য কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠানের স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ করার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে এভাবে স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো আবেদন করলে আইআরডি তা যাচাই–বাছাই করে মওকুফ করে থাকে।

আইআরডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, জাতীয় স্বার্থে বিদ্যুৎ খাতের বড় বড় প্রকল্পে এই ধরনের স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ করা হয়। এর আগেও এভাবে স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ করা হয়েছে।

স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ করার অন্য কারণও থাকে। ২০২২ সালের আগপর্যন্ত নিয়ম ছিল, স্ট্যাম্প ডিউটি পুরোটাই আরোপ করতে হবে। বহু প্রতিষ্ঠানের স্ট্যাম্প ডিউটির পরিমাণ শত শত কোটি টাকা হয়ে যেত। এ জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তা মওকুফের আবেদন করত এবং মওকুফ পেয়ে যেত। এমন প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালে স্ট্যাম্প আইন সংশোধন করা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়, কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর স্ট্যাম্প ডিউটি যা–ই আরোপযোগ্য হোক না কেন, এর পরিমাণ কোনোভাবেই ১০ কোটি টাকার বেশি হবে না। এর চেয়ে বেশি হলে প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে তা মওকুফ করা হয়।

স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফের সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে চলতি বছরে জানুয়ারিতে। বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিইপিসিএল) ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ওই প্রকল্পে আর্থিক দলিল ও চুক্তির বিপরীতে আরোপ করা স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ১ হাজার ২৩ কোটি ৭২ লাখ ২০ হাজার ৬১৮ টাকা মওকুফ করা হয়েছে। মোট ১৫টি খাতে এই শুল্ক মওকুফ করা হয়। সবচেয়ে বেশি ১৯৯ কোটি টাকা মওকুফ করা হয় মেরিন বিমা খাতে। এ ছাড়া ভূমির ভাড়া, বিমা, নিরাপত্তা, শেয়ারের চুক্তি, বিদ্যুৎ বিতরণ চুক্তি ইত্যাদি খাতেও বিপুল অর্থ মওকুফ করা হয়।

আইআরডি সূত্রে জানা যায়, এই কোম্পানির স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফের জন্য কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎ বিভাগের মাধ্যমে বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি আইআরডির কাছে অনুরোধ করেছিল। জাতীয় স্বার্থ ও ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এই অনুরোধ করা হয়। এর আগে অন্য কোম্পানির জন্যও এমন অনুরোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।