১ জুন বাজেট ঘোষণা, এ নিয়ে ঘটছে দ্বিতীয়বার

জাতীয় বাজেট
প্রথম আলো

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন আগামী ১ জুন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইজদানী খানের সভাপতিত্বে গত রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার ১ জুন বাজেট উপস্থাপন করা হচ্ছে জাতীয় সংসদে। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন ১ জুন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন আহমদ দেশের প্রথম বাজেট (৭৮৬ কোটি টাকা) সংসদে উপস্থাপন করেছিলেন ৩০ জুন।

অর্থ বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১ জুনের কাছাকাছি ২ জুন বাজেট উপস্থাপিত হয়েছে এখন পর্যন্ত মোট দুবার। প্রথমবার ১৯৭৯ সালের ২ জুন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মির্জা নুরুল হুদা ৩ হাজার ৩১৭ কোটি টাকার বাজেট এবং আবদুল মুহিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন ২ জুন।

জুনের পয়লা তারিখে বা শুরুতে বাজেট উপস্থাপিত হলে তা নিয়ে আলোচনার সময় বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে সে সুযোগ তেমন হবে না। কারণ, জুনের শেষ দিকে ঈদুল আজহার ছুটি থাকবে। তাই আগামী অর্থবছরের বাজেট পাস হতে পারে জুন মাস শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নতুন অর্থবছরে বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার মতো। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেট ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা, যা পরে সংশোধন করে কিছুটা কমানো হয়।

চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। তবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে নতুন এডিপির আকার হতে পারে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, আগামী বাজেটে ঘাটতি থাকবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ দশমিক ২ শতাংশ, আকারে যা হতে পারে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।

গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হারসংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিলের ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় বৈঠক ও সম্পদ কমিটির বৈঠকে আগামী বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

তবে বাজেট চূড়ান্ত করার আগে ঘাটতি একটু বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার একটু কমিয়ে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ করা হতে পারে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ ছিল ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের সঙ্গে আগামী বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে আনার শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আইএমএফ শর্ত দেওয়ার আগেই অবশ্য জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তারপরও আগামী অর্থবছরের বাজেটে তা আরও বাড়িয়ে বরাদ্দ করা হচ্ছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জন্য তা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকেই (এনবিআর) সংগ্রহ করতে হবে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।