রামপালে হচ্ছে বড় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র

উৎপাদন শুরুর পর থেকে ২০ বছর এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। গতকাল ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব অনুমোদন

সৌরবিদ্যুৎ
প্রতীকী ছবি

বাগেরহাটের রামপালে দেশের বৃহত্তম ৩০০ মেগাওয়াটের যে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, তা থেকে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের ইউনিট ১১ টাকায় (১০ দশমিক ২০ সেন্ট) কিনবে সরকার। ২০ বছর এ বিদ্যুৎ কেনা হবে। এ জন্য সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১০ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিদ্যুতের দর (ট্যারিফ) বিষয়ক এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে তা সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

‘বিদ্যুৎ নেই তো টাকাও নেই’ অর্থাৎ নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট—এমন শর্তে চার প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রধান বিনিয়োগকারী সৌদি আরবের অ্যাকোয়া পাওয়ার কোম্পানি। সঙ্গে থাকছে দেশীয় বিনিয়োগকারী কমফিট কম্পোজিট নিট বাংলাদেশ ও ভিয়েলাটেক্স স্পিনিং লিমিটেড। আরও থাকছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)।

সাঈদ মাহবুব খান জানান, এ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার। সৌদি আরবের কোম্পানি এ বিনিয়োগের ৪৫ শতাংশের অংশীদার। আর জমির জোগানদাতা হিসেবে বিউবো এটির ২৫ শতাংশের মালিকানায় থাকবে। এ ছাড়া ১৫ শতাংশ কমফিট কম্পোজিট নিট এবং বাকি ১৫ শতাংশ ভিয়েলাটেক্স স্পিনিংয়ের মালিকানায় থাকবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরুর কথা রয়েছে।

সূত্রগুলো জানায়, দেশের সবচেয়ে বড় এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫ লাখ পরিবারের (হাউসহোল্ড) কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানো যাবে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোতে ট্যারিফ হার ২ থেকে ৩ সেন্ট হলেও এ কোম্পানি থেকে সরকার ১০ দশমিক ২০ সেন্ট দরে বিদ্যুৎ কিনবে কেন—জানতে চাওয়া হয় এ প্রকল্পের অংশীদার ভিয়েলাটেক্সের চেয়ারম্যান ডেভিড হাসনাতের কাছে। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখানে জমির দাম বেশি, ব্যাংকের সুদের হার বেশি, রোদের প্রখরতা কম, পাইলিং করতে হয় বেশি। এসব কারণেই বিদ্যুতের ইউনিট মূল্য বেশি।

দেশে এত দিন সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের নাম ছিল তিস্তা সোলার লিমিটেড। এটির বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ২০০ মেগাওয়াট। উত্তরাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২ আগস্ট গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের অনাবাদি চরের ৬৫০ একর জমিতে তিস্তা সোলার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড এ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে।

এর আগে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সুতিয়াখালী সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ছিল একসময় দেশের বৃহৎ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ২০২০ সালে এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। দেশে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।