ভ্রমণে গেলে বাড়বে খরচ, গুনতে হবে বাড়তি কর

দেশের ভেতরে কিংবা বিদেশে যেতে বিমানে উঠলেই বাড়তি ভ্রমণ কর দিতে হবে আপনাকে। কারণ, প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ভ্রমণ কর বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ভ্রমণ কর বাড়ানোর কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা আছে। সে জন্য অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার সঙ্গে আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। এর অংশ হিসেবে জনসাধারণের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ কমিয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের অভ্যাস তৈরি ও রাজস্ব জোগানে নতুন খাত সৃষ্টির জন্য ভ্রমণ করের হার বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে।

অবশ্য বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী ভ্রমণ কর বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি। এ বিষয়ে অর্থ বিলে বলা হয়েছে, জল, স্থল ও আকাশ—তিন পথেই ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর বাড়বে। প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী জুলাই মাস থেকে আকাশপথে উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, চীন, জাপান, হংকং, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া ও তাইওয়ানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক যাত্রীকে ছয় হাজার টাকা ভ্রমণ কর দিতে হবে।

উল্লেখিত দেশ ছাড়া আকাশপথে অন্য কোনো দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর দিতে হবে চার হাজার টাকা। আর দেশের অভ্যন্তরে আকাশপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর দিতে হবে ২০০ টাকা। এ ছাড়া স্থলপথে যেকোনো দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে গুনতে হবে ১ হাজার টাকা ভ্রমণ কর। জলপথ তথা সমুদ্রপথে অন্য কোনো দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে গুনতে হবে এক হাজার টাকা কর।

তবে সবাইকে এই ভ্রমণ কর দিতে হবে না। অর্থ বিলে বলা হয়েছে, পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সের কোনো যাত্রী, হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে গমনকারী ব্যক্তি, অন্ধ ব্যক্তি বা ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী বা স্ট্র্যাচার ব্যবহারকারী পঙ্গু ব্যক্তি, জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্য, বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিক মিশনের কূটনৈতিক মর্যাদাসম্পন্ন সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্য, বাংলাদেশে কর্মরত বিশ্বব্যাংক, জার্মান কারিগরি সংস্থা ও জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্য, বিমানে কর্তব্যরত ক্রু, বাংলাদেশের ভিসাবিহীন ট্রানজিট যাত্রী যাঁরা ৭২ (বাহাত্তর) ঘণ্টার অধিক সময় বাংলাদেশে অবস্থান করবেন না, যেকোনো বিমান সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি বিনা ভাড়ায় অথবা হ্রাসকৃত ভাড়ায় বিদেশে যাবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর প্রযোজ্য হবে না।

এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে যে কাউকে এই ভ্রমণ কর দেওয়া থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন, ভ্রমণ কর বৃদ্ধির মাধ্যমে ‘এক দিকে আমাদের অধিক পরিমাণে রাজস্ব জোগান হবে এবং অন্য দিকে অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ কমার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।’