মন্ত্রী–সচিবেরা আকাশপথে বিদেশভ্রমণ করবেন একই শ্রেণিতে

বিমান
প্রতীকী ছবি

সরকারি খরচে আকাশপথে বিদেশভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতিসহ মন্ত্রীদের এত দিন প্রথম শ্রেণিতে আকাশপথে ভ্রমণ করার এখতিয়ার থাকলেও এখন তাঁরা বিজনেস বা ক্লাব অথবা এক্সিকিউটিভ শ্রেণিতে ভ্রমণ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গত ৩১ মে এমন সিদ্ধান্ত দিলে একই দিন ‘সরকারি খরচে আকাশপথে বিদেশে প্রথম শ্রেণিতে ভ্রমণ স্থগিতকরণ’ শীর্ষক অফিস–স্মারক জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এতে বলা হয়, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রথম শ্রেণিতে আকাশপথে তাঁদের ভ্রমণ স্থগিত থাকবে। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় কৃচ্ছ্রসাধনের উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে বলে অফিস–স্মারকে জানানো হয়।

স্মারকে ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর জারি হওয়া অর্থ বিভাগের একটি আদেশের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘সরকারি কাজে বিদেশভ্রমণকালে বৈদেশিক মুদ্রায় প্রাপ্য ভ্রমণ ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা’ শীর্ষক ওই আদেশের ২১ (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিতদের ক্ষেত্রে এ অফিস–স্মারক প্রযোজ্য।

আদেশটির ২১ (ক) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, মন্ত্রীর সমমর্যাদার কর্মকর্তা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, পরিকল্পনা কমিশনের উপচেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) প্রধান এবং সরকারের মুখ্য সচিব প্রথম শ্রেণিতে ভ্রমণ করতে পারবেন।

ওই ধারা অনুযায়ী, ব্যতিক্রম হিসেবে বিদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের প্রথম কোনো দেশে যাওয়া এবং বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের সহগামী হয়ে তাঁদের বাংলাদেশে আসার ক্ষেত্রেও আকাশপথে প্রথম শ্রেণিতে ভ্রমণ করার বিধান ছিল। নতুন নিয়মে তাঁদের সবারই সুবিধা এক ধাপ কমল।

নতুন এ সিদ্ধান্তে কেমন সাশ্রয় হবে—এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, তাঁরা এ নিয়ে কোনো বিচার–বিশ্লেষণ করেননি। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইকোনমি শ্রেণির চেয়ে বিজনেস শ্রেণির আকাশপথের ভাড়া তিন গুণ এবং প্রথম শ্রেণির ভাড়া পাঁচ থেকে সাত গুণ বেশি।

প্রধানমন্ত্রীসহ সব মন্ত্রীর আকাশপথে ভ্রমণসুবিধা কমলেও সংসদ সদস্য, গভর্নরসহ সচিবদের সুবিধা আগের মতোই আছে।

যেহেতু কৃচ্ছ্রসাধনের প্রশ্ন, সে হিসেবে তাঁদের ধাপও আরেকটু কমানোর চিন্তা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন ৮ জুন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কৃচ্ছ্রসাধনের এ সময়ে সবারই একই পথে এগিয়ে আসা উচিত। আর বিষয়টি যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুশাসনে হয়েছে, ফলে সংসদ সদস্য ও সচিবদের আরেক ধাপ নিচে, অর্থাৎ ইকোনমি শ্রেণিতে আকাশপথে বিদেশভ্রমণের অনুশাসন আসবে কি না, তা আমার পক্ষে বলা কঠিন।’

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ভ্রমণ ও বদলি বাবদ ২ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা দুই বছর আগের এ খাতের প্রকৃত ব্যয় ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকার প্রায় দ্বিগুণ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ধরা হয় ১ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। জুন মাস শেষ হওয়ার পর অর্থবছরের পুরো হিসাব বোঝা যাবে।

সচিবেরা কি ব্যয় সাশ্রয় করবেন না

২০১২ সালের ৯ অক্টোবর জারি আদেশের ২১ (খ) অনুযায়ী, সংসদ সদস্য, অ্যাটর্নি জেনারেল, হিসাব মহানিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, মহা পুলিশ পরিদর্শক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, তিন বাহিনীতে মেজর জেনারেলের পদমর্যাদার ব্যক্তি, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবসহ সব সচিব, জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের মহাপরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য, জাতীয় অধ্যাপক, সিটি করপোরেশনের সব মেয়র, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, সরকারের অতিরিক্ত সচিব, আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনসহ সব করপোরেশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সব কমিশনের চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সব বোর্ডের চেয়ারম্যান, কৃষি ব্যাংকসহ সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা বিজনেস বা ক্লাব অথবা এক্সিকিউটিভ শ্রেণিতে ভ্রমণ করতে পারবেন।

অর্থ বিভাগের ৩১ আগস্টের অফিস–স্মারকে আকাশপথে বিদেশভ্রমণের ক্ষেত্রে তাঁদের ব্যাপারে কোনো ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়নি। সে হিসেবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যে শ্রেণিতে আকাশপথে বিদেশভ্রমণ করবেন, একই শ্রেণিতে বিদেশভ্রমণ করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সব সচিব এবং ব্যাংকের এমডিরাও।

বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষের কাছে এ ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি অর্থ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা বলতে ৮ জুন তাঁর কার্যালয়ে গেলে অর্থ সচিবের একান্ত সচিব মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, অর্থ সচিব এ ব্যাপারে কথা বলবেন না।

সরকারি কাজে বিদেশভ্রমণের জন্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ সরকারি কর্মচারীদের পদমর্যাদা অনুযায়ী ভ্রমণ ভাতা দেওয়া হয়। হোটেলের ভাড়া, যাতায়াতের ভাতা, খাবার খরচ ইত্যাদি দেওয়া হয় মার্কিন ডলারে। ভাতা নির্ধারণে ‘বিশেষ পর্যায়’ ও ‘সাধারণ পর্যায়’ নামের দুটি শ্রেণি রয়েছে। আবার দেশওয়ারি রয়েছে গ্রুপ-১, গ্রুপ-২ ও গ্রুপ-৩ নামের তিনটি শ্রেণি।

বিশেষ ও সাধারণ পর্যায়ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে আবার দুটি ভাগ। এক ভাগে রয়েছেন—জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি এবং মন্ত্রী, ডেপুটি স্পিকার ও মন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা।

আর অন্য ভাগে রয়েছেন—প্রতিমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, উপমন্ত্রী ও অনুরূপ পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা।

যোগাযোগ করলে সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নীতিগতভাবে সিদ্ধান্তটিকে স্বাগত জানাই। তবে সিদ্ধান্ত তো অনেকই হয়, তার বাস্তবায়ন কতটুকু হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আশঙ্কা হয়, এক শ্রেণির ভ্রমণকারী না এর মধ্যেও ফাঁক খুঁজে বের করে ফেলেন। অনেকটা এমন যে সরকারি খরচে তো যাচ্ছি না, যাচ্ছি বিদেশি আমন্ত্রণে।’

সংসদ সদস্য, গভর্নর বা সচিবেরাও তাঁদের বিদ্যমান ধাপের চেয়ে এক ধাপ নিচে ব্যয় করতে পারেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ‘তা তো পারেনই। তবে উন্নয়ন প্রকল্পে ঠিকাদারের বিল, ওভার ইনভয়েসিং (পণ্য মূল্য বেশি দেখানো), এমনকি পণ্য রপ্তানি না করেও যে অর্থ পাচার হচ্ছে, এসব বিষয়ে সরকার মনোযোগ দিলে বরং বেশি অর্থ সাশ্রয় করা যাবে।’

ব্যয়সাশ্রয়ের আরও যেসব পদক্ষেপ

২০২২ সালের এপ্রিল-মে মাসে দেশে ডলার-সংকট দেখা দিলে অর্থ বিভাগ মে মাসে সরকারি কর্মচারীদের বিদেশভ্রমণ সীমিত করার বিষয়ে একাধিক আদেশ জারি করে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মচারীদের বিদেশসফর বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ২০২২ সালের ১২ মে পরিপত্র জারি করে অর্থ বিভাগ।

এতে বলা হয়েছিল, করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষাসফর, এপিএ এবং ইনোভেশনের আওতামুক্ত ভ্রমণ ও ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। এ আদেশ উন্নয়ন বাজেট ও পরিচালন বাজেট উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

একই বছরের ১১ মে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত সভার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, বিদেশসফর আর নয়। যদি বিশেষ কারণে কর্মকর্তাদের বিদেশসফরে যেতে হয়, তাহলেই যাবেন, অন্যথায় নয়।’

যদিও ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর এক আদেশে সরকারি কর্মচারীদের বিদেশভ্রমণের শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়। সীমিত আকারে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে আদেশ জারি করে তখন অর্থ বিভাগ। যদিও তা দুই মাস টেকেনি।

পরে একই বছরের ৯ নভেম্বর আবার সরকারের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি কর্মচারীদের সব ধরনের বিদেশভ্রমণ বন্ধ ঘোষণা করে অর্থ বিভাগ। তখন বলা হয়, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সব ধরনের বিদেশভ্রমণ পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

আরও বলা হয়, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন করপোরেশন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর নিজস্ব অর্থায়নেও সব ধরনের বিদেশভ্রমণ বন্ধ থাকবে।

অবশ্য উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয় তখন। এ বিষয়ে বলা হয়, বিদেশি সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে দেওয়া বৃত্তি বা ফেলোশিপের আওতায় স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি কোর্সে পড়াশোনার জন্য অনুমোদন নিয়ে বিদেশ যাওয়া যাবে।

আরও বলা হয়, বিদেশি সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বিশেষায়িত বা পেশাগত প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য বিদেশে যাওয়া যাবে।

কাদের ভ্রমণ ভাতা কত

বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার যুক্তি দিয়ে বিদেশভ্রমণের ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর অফিস-স্মারক জারি করে সরকার। এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে বিদেশভ্রমণ করলে তাঁরা যে হারে ভাতা পাবেন, তাঁদের স্ত্রী বা স্বামীরাও একই হারে তা পাবেন।

গ্রুপ ১-এর মধ্যে ৩০টি দেশের নাম নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, হংকং, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ইতালি, সুইডেন, জার্মানি, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন ও তুরস্ক। এ ছাড়া রয়েছে ইউরোপ, ওশেনিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশ।

গ্রুপ ২-এ রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, উজবেকিস্তান, জর্ডান, ইরাক, লেবানন, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কেনিয়া, মরিশাস, সুদান, সিয়েরা লিয়ন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর, লিবিয়া, মরক্কো ও আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ।

গ্রুপ ৩-এ রয়েছে নেপাল, ভিয়েতনাম, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশ।

স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির জন্য গ্রুপ ১–ভুক্ত দেশের ক্ষেত্রে হোটেল ভাড়া ও নগদ ভাতা মিলিয়ে রয়েছে দৈনিক ৬৮৭ ডলার। আর মন্ত্রীদের জন্য রয়েছে ৫৪৭ ডলার। অন্য গ্রুপের ক্ষেত্রে এ ভাতা আরেকটু কম।

মন্ত্রীদের কেউ যদি হোটেল ভাড়া ও নগদ ভাতার পরিবর্তে সর্বসাকল্যে ভাতা নিতে চান, সে বিকল্পও করে রাখা আছে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের দৈনিক ভাতা দেশ অনুযায়ী ২৬৩ থেকে ৩২৮ ডলার করে। ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে সর্বসাকল্যে ভাতা নির্ধারণ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যয়সাশ্রয় যদি করতেই হয়, তাহলে এত লোক নিয়ে বিদেশে যাওয়ার কী দরকার? সম্ভব হলে এ জায়গায় কাটছাঁট করতে হবে।’

পুকুর খনন করা শিখতে নেদারল্যান্ডস যাওয়া বা এ–জাতীয় ভ্রমণও রোধ করা দরকার বলে মনে করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা কমিশন কীভাবে যে এসব প্রস্তাব অনুমোদন করে, বিস্ময় লাগে।’