শিগগিরই চালু হচ্ছে তিন স্থলবন্দর

ফাইল ছবি

ভারতের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণ করতে শিগগিরই আরও তিনটি স্থলবন্দর চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এই স্থলবন্দরগুলো হলো খাগড়াছড়ির রামগড়, ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়া ও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গোবড়াকুড়া-কড়ইতলি। এর মধ্যে বিলোনিয়া ও গোবড়াকুড়া-কড়ইতলি স্থলবন্দরের অবকাঠামো পুরোপুরি প্রস্তুত। আর রামগড়ে অস্থায়ী অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পরপরই এই তিনটি স্থলবন্দরের উদ্বোধন করতে চায় তারা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে উদ্বোধনের জন্য সময় চাওয়া হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তিনটি বন্দর পরিচালনা করতে প্রস্তুত, ইতিমধ্যে আমরা তা জানিয়ে দিয়েছি। এসব বন্দর চালু হলে দুই দেশের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য আরও মসৃণ হবে, বাণিজ্য বাড়বে।

করোনার সময় স্থলবন্দরগুলো চালু রাখার কারণে আমদানি-রপ্তানি অব্যাহত ছিল।’ মো. আলমগীর আরও বলেন, এসব বন্দরে এখন একই ছাদের তলায় বন্দর–সংক্রান্ত সব সেবা মিলবে। বিভিন্ন সংস্থার জন্য আলাদা আলাদা জায়গা রাখা হচ্ছে।

রামগড় স্থলবন্দর এখন আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে পণ্যের চালান নিতে এই স্থলবন্দর ব্যবহার করতে চায় ভারত। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক চালানও গেছে। এই সীমান্তে ইমিগ্রেশনসহ যাবতীয় সুবিধা মিলবে, যদিও স্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে না। ওপরে ইস্পাতের অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। কারণ, মূল প্রকল্পের নকশায় যেসব জমিতে অবকাঠামো তৈরি করার কথা, তা নিয়ে ভারতীয় পক্ষের আপত্তি রয়েছে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় এই স্থলবন্দর চালুর দিনক্ষণ ঘোষণা করা হতে পারে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চু৵য়াল উপায়ে রামগড়ের মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করেন। সেতুর এপারে রামগড় স্থলবন্দর। ২০১০ সালে রামগড়কে স্থলবন্দর ঘোষণা দেওয়া হয়। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর ঘোষণা দিয়ে জনবল নিয়োগের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে।

২০০৯ সালে বিলোনিয়া স্থলবন্দর ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে বিলোনিয়া স্থলবন্দর নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালে ৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটি গত জুন মাসে শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ একর জমি অধিগ্রহণ করে ওপেন স্ট্যাক ইয়ার্ড, পার্কিং ইয়ার্ড, গুদামঘর, তিনতলা অফিস ভবনসহ যাবতীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। এখন চালুর অপেক্ষায় আছে। অবশ্য আগে থেকেই এটি শুল্ক স্টেশন হিসেবে কার্যকর ছিল।

২০১০ সালে ময়মনসিংহের গোবরাকুড়া-কড়ইতলি স্থলবন্দর ঘোষণা দেওয়া হয়। এর প্রায় ৮ বছর পর ৭৫ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ৩১ একর জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, ওপেন স্ট্যাক ইয়ার্ড, পার্কিং ইয়ার্ড, দুটি গুদামঘর, অফিস ভবনসহ যাবতীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। গত জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। স্থলবন্দর এখন পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানা গেছে।

২০০১ সালে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৪টি স্থলবন্দর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি স্থলবন্দর হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।

বাকি স্থলবন্দরগুলোর এসব স্থলবন্দরে কোনো অবকাঠামো তৈরি হয়নি কিংবা তৈরি হচ্ছে। এই স্থলবন্দরগুলো হলো থেগামুখ (রাঙামাটি), চিলাহাটি (নীলফামারী), দর্শনা (চুয়াডাঙ্গা), দৌলতগঞ্জ (চুয়াডাঙ্গা), ধানুয়া কামালপুর (জামালপুর), শেওলা (সিলেট), দর্শনা (চুয়াডাঙ্গা), ভোলাগঞ্জ (সিলেট) ও বাল্লা (হবিগঞ্জ)।