স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১০৭০ টাকা। দেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।
আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণের কৌশল’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য উঠে আসে। স্বাস্থ্যসেবায় মাথাপিছু সরকারি খরচ মাত্র ১০৭০ টাকা মানে হলো, সরকার প্রতিবছর যত টাকা স্বাস্থ্যসেবা খাতে খরচ করে, তা সুবিধাভোগীদের মাথাপিছু ভাগ করে দিয়ে মাত্র ১০৭০ টাকা হয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। সেমিনারে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বক্তারা।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়, দেশের স্বাস্থ্য খাতের বাজার বছরে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। ২০১০ সাল থেকেই এ খাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য খাতের বাজার প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলারের। আগামী সাত বছরের মধ্যে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। এর মধ্যে মেডিকেল যন্ত্রপাতির বাজার প্রায় ৮২০ মিলিয়ন ডলারের।
রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অডিটরিয়ামে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর।
সেমিনারে বিদেশে রোগী যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, বিদেশে চিকিৎসায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে। চিকিৎসা নিতে সবচেয়ে বেশি রোগী ভারতে যান। ভারতের চিকিৎসা ভিসার প্রায় ৫২ শতাংশ বাংলাদেশিদের। ২০২৪ সালে প্রায় ৪ লাখ ৮২ হাজার বাংলাদেশি রোগী ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের পরে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার অবস্থান। দেশের চিকিৎসায় বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে। রোগ নির্ণয় ঠিক হচ্ছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে। হঠাৎ বিল বেড়ে যায় ও লুকানো খরচের ভয় থাকে। নকল ওষুধ ও নিম্নমানের সামগ্রীর আশঙ্কা থাকে।
ঢাকায় অধিকাংশ হাসপাতাল গড়ে উঠেছে জানিয়ে বলা হয়, দেশের ৩৬টি স্পেশালাইজড হাসপাতালের মধ্যে ঢাকায় ১৯টির অবস্থান ও ঢাকার বাইরে ১৭টি। ঢাকা বিভাগে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা ১ হাজার ৮১০টি। আর ৭ বিভাগে রয়েছে ৩ হাজার ৬৫১টি।