বড় জাহাজকে বরণ করল চট্টগ্রাম বন্দর

গত রোববার প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে ২০০ মিটার লম্বা জাহাজটি
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ২০০ মিটার লম্বা ও প্রায় ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানোর কার্যক্রম উদ্বোধন হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে বন্দরের সিসিটি-১ জেটিতে বেলুন উড়িয়ে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

উদ্বোধনের আগের দিন রোববার বিকেলে ২০০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার গভীরতার ‘এমভি কমন এটলাস’ নামের জাহাজটি জেটিতে ভেড়ানো হয়। এর আগে সর্বোচ্চ ১৯০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানোর সুযোগ ছিল। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এইচ আর ওয়েলিংটন ফোর্ডের সমীক্ষার সুপারিশ পাওয়ার পর আগের তুলনায় বড় জাহাজ ভেড়ানোর উদ্যোগ নেয় বন্দর।

বড় জাহাজ ভেড়ানোর সুযোগ তৈরি করার মাধ্যমে বন্দর সুবিধার নতুন মাইলফলক উন্মোচন হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন। বক্তারা বলেন, এতে পণ্য পরিবহনে খরচ যেমন কমবে, তেমনি আগের তুলনায় কমসংখ্যক জাহাজে বেশি পণ্য পরিবহন করা যাবে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রবার্ট ডিকসন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ এবং জরিপ সংস্থা এইচ আর ওয়েলিংটন ফোর্ডের বাংলাদেশ প্রতিনিধি মনজুরুল হক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।

বন্দরে ভেড়ানো ২০০ মিটার লম্বা জাহাজটি ব্রাজিল থেকে ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি নিয়ে এসেছে। এই চিনি আমদানি করেছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। বন্দরে পৌঁছানোর সময় জাহাজটির ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশের দৈর্ঘ্য) ছিল ১০ দশমিক ৮০ মিটার। তাই প্রথমে জাহাজটি বহির্নোঙরে রেখে কিছু চিনি খালাস করা হয়। পরে ড্রাফট ১০ মিটারে এনে বন্দর জেটিতে ভেড়ানো হয়। এ সময় সেটিতে ৩৬ হাজার টন চিনি ছিল।

চট্টগ্রাম বন্দর জোয়ার-ভাটানির্ভর একটি প্রাকৃতিক বন্দর। বন্দরের জাহাজ চলাচলের পথে পানির গভীরতা কম। জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা বাড়লে জাহাজগুলো বন্দরের নিজস্ব পাইলটের মাধ্যমে সাগর থেকে কর্ণফুলী নদী দিয়ে মূল জেটিতে আনা-নেওয়া করা হয়। অন্যদিকে গুপ্ত বাঁকে প্রশস্ততার সীমাবদ্ধতার কারণে জাহাজের দৈর্ঘ্য বাড়াতে বড় বাধা ছিল। কারণ, গুপ্ত বাঁক দিয়ে প্রায় ৯০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে জাহাজ জেটিতে আনা-নেওয়া করতে হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, নির্মাণ শেষ হওয়ার পথে থাকা পতেঙ্গা টার্মিনাল কখন চালু হবে? প্রস্তাবিত বে টার্মিনাল কখন নির্মাণ হবে, তা–ও জানতে চান।

পরে বক্তৃতায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ চলছে। পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ে পরামর্শকও নিয়োগ হয়েছে। বে টার্মিনাল নিয়ে তিনি বলেন, ‘এর আগে ২০২৪ সালে বে টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু হবে বলেছিলাম। তবে করোনা ও যুদ্ধের কারণে দুই বছর চলে গেছে। আশা করি ২০২৫ সালের শেষে বা ২০২৬ সালের শুরুতে বে টার্মিনালের চালু করতে সক্ষম হব।’