পুরোনো দামে কেনা তেল বিক্রি হচ্ছে নতুন দামে

দাম বাড়ালে সঙ্গে সঙ্গেই বাজারে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু দাম কমলে সেটি কার্যকর হতে কয়েক দিন সময় লাগে।

বোতলজাত সয়াবিন তেল
ফাইল ছবি

বোতলজাত সয়াবিনের দাম সাত টাকা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজারে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারাও সয়াবিনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাজারে এখনো নতুন দামের সয়াবিন তেল আসেনি। কিন্তু পুরোনো দাম লেখা মোড়কের বোতলও নতুন দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। তবে দাম কমার ঘোষণা যখন দেওয়া হয় তখন দেখা যায়, নতুন দামের বা নতুন মোড়কের পণ্য না আসার অজুহাতে দাম না কমিয়ে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি করা হয়; অর্থাৎ দাম বাড়ালে সঙ্গে সঙ্গেই বাজারে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু দাম কমলে সেটি কার্যকর হতে কয়েক দিন সময় লাগে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর কাঁঠালবাগান বাজার, গ্রিনরোড, পান্থপথ, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বোতলজাত সয়াবিন তেলের মোড়কে দাম ১৮৫ টাকা লেখা, অথচ সেই তেল বিক্রি করা হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯২ টাকায়। গত মঙ্গলবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় মিলমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম সাত টাকা বাড়িয়ে করা হয় ১৯২ টাকা। আগে যা ছিল ১৮৫ টাকা। রাজধানীর বড় বাজার থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার দোকানে এখন যেসব বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে, তার বেশির ভাগই পুরোনো দামের। মিলমালিকেরা বলছেন, নতুন দামের তেল বাজারে আসতে আরও ২-৩ দিন লেগে যাবে। কিন্তু এ ফাঁকে ভোক্তার কাছ থেকে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে কোথাও কোথাও মোড়কে লেখা দামেও সয়াবিন তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে।

‘মঙ্গলবার ৫ লিটারের ৪টি বোতলের একটা কার্টন পরিবেশকদের কাছ থেকে ৩ হাজার ৫২০ টাকায় কিনেছিলাম। আজ (বুধবার) সেটা কিনেছি ৩ হাজার ৫৬০ টাকায়।
নাঈম হাসান, বিক্রেতা, রব স্টোর, কারওয়ান বাজার

গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজার থেকে বাজার করে হাতিরঝিল হয়ে মগবাজারে বাসায় ফিরছিলেন মাহতাব হোসেন নামের এক গাড়িচালক। এ সময় তাঁর হাতে ছিল চাল, ডাল, পেঁয়াজ ও আধা লিটারের একটি সয়াবিন তেলের বোতল। তাঁর সঙ্গে হাতিরঝিল এলাকায় কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

সয়াবিনের দাম কত নিল, প্রশ্ন করতেই মাহতাব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আধা লিটারের বোতলের গায়ে দাম লেখা আছে ৯৭ টাকা। কিন্তু দোকানদার নিল ১০০ টাকা। ওই দোকানে ১৮৫ টাকা লিটারের সয়াবিনও আছে। দাম বেড়েছে বলে ওটার দামও ৫ টাকা বাড়তি চেয়েছিল। টাকা কম থাকায় আধা লিটারের বোতল কিনলাম।’

পাড়া-মহল্লা ও বিভিন্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও দাম কমতে সময় লাগে। তবে দাম বাড়ানোর ঘোষণা এলেই পাইকারি ব্যবসায়ী ও পরিবেশকেরা সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়িয়ে দেন। এতে তাঁদের বাধ্য হয়ে পাড়া-মহল্লার দোকানেও বাড়তি দামে তেল বিক্রি করতে হয়।

কারওয়ান বাজারের রব স্টোরের বিক্রেতা নাঈম হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মঙ্গলবার ৫ লিটারের ৪টি বোতলের একটা কার্টন পরিবেশকদের কাছ থেকে ৩ হাজার ৫২০ টাকায় কিনেছিলাম। আজ (বুধবার) সেটা কিনেছি ৩ হাজার ৫৬০ টাকায়; অর্থাৎ দাম বাড়ার ঘোষণায় প্রতি বোতলের দাম ১০ টাকা বাড়িয়ে রাখা হলো। অথচ এগুলো পুরোনো দামের তেল।’

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন নতুন করে সয়াবিনের দাম বাড়ানোর যে ঘোষণা দিয়েছে, তাতে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন ১৯২ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা ও খোলা পাম তেলের দাম ঠিক করা হয় ১৪৫ টাকা। সয়াবিনের দাম বাড়লেও খোলা পাম তেলের দাম কেজিপ্রতি সাত টাকা কমানো হয়েছে।