বাজেটের সঠিক বাস্তবায়নই মূল বিষয়: গ্রাসরুট উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউরস
অনেক সমস্যার মধ্যে এবারের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট গুরুত্বপূর্ণ। মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের পর সার্বিক অর্থনীতির গতি কোন পথে এগোবে কিংবা কোথায় পৌঁছাবে, তা–ই এখন প্রধান বিষয় বলে মনে করে অ্যাসোসিয়েশন অব গ্রাসরুট উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউরস বাংলাদেশ।
‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার নিয়ে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে সরকার ব্যয় বাড়াতে চায় আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণের জন্য ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে, যা ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট বাজেটের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় দুই হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের পাশাপাশি চিকিৎসাবিজ্ঞানের মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার গুরুত্ব বিবেচনায় ‘সমন্বিত স্বাস্থ্যবিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন’ তহবিলে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি মৌসুমী ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোট বাজেটের যে পরিমাণ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ, তার অন্তত ৭০ শতাংশই ব্যয় হবে বেতন–ভাতা মেটাতে। যদিও হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকগুলোতে রোগী মারা যাওয়ার হার এখনো অনেক বেশি। যন্ত্রপাতির অভাবে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়। বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার বেশির ভাগই যখন বেতন–ভাতায় চলে যায়, তখন সাধারণের কপালে তেমন কিছু জোটে না। এসব বিষয়ে জরুরি নজর না দিলে সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে; সেই সঙ্গে চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে।
গ্রাসরুট উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউরস বলেছে, এসএমই খাতের জন্য প্রকৃত অর্থে কতটুকু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে বড় বিষয় হলো বরাদ্দ সঠিকভাবে, সঠিক জায়গায়, সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না। মহামারির সময় যে ধরনের পরিস্থিতি দেখা গেছে, তার বাইরে এসে উদ্যোক্তাদের টিকে থাকার লড়াই আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। সরকার মহামারির পরে যে বরাদ্দ দিয়েছিল, তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি। এমনকি যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে মূলধারার অর্থনীতিতে যে ধরনের অর্থের আগমন হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। তাই বরাদ্দ যতটুকুই হোক না কেন, সঠিক বাস্তবায়নে নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন মৌসুমী ইসলাম।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ব্যাংক থেকে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। সরকারি কাজে ব্যাংকঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির একধরনের সতর্কসংকেত। মনে রাখতে হবে, ঋণ করে সরকার চালানো যাবে না। ঋণের ঘানি থেকে বের হয়ে এসে রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে সমৃদ্ধ অর্থনীতির বাংলাদেশ।
এ পরিস্থিতিতে গ্রাসরুট উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউরস মনে করছে, যে বিষয়টি এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা হলো বাজেটের সঠিক বাস্তবায়ন।