বাজারে চিনির সরবরাহে টান, কমেছে বিক্রিও

চিনি
ফাইল ছবি

বাজারে চিনির সরবরাহে এখনো টান। কোনো বাজারে মিলছে তো, আবার কোনো বাজারে মিলছে না চিনি। দুই মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চিনির দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এতে চিনির বিক্রি কমে এসেছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অনেক ক্রেতাও বলছেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনির ব্যবহার কমিয়ে সাশ্রয়ী হচ্ছেন ভোক্তারা।

রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা চিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার কথা বলে জানা গেছে, বাজারে চিনি সরবরাহ এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দুই মাস আগে থেকে বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, সেটা কিছুটা কমে এসেছে। তবে ওই সময় দাম যেভাবে বেড়ে গিয়েছিল, তা এখনো কমেনি। বাজারে প্রতি কেজি চিনি এখনো ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই মাস আগে চিনির দাম ছিল কেজি প্রতি ৯০ টাকার মধ্যে।

মৌলভীবাজারে পাইকারি চিনির ব্যবসায়ী ইয়াসিন স্টোরের স্বত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতি সপ্তাহে ৫০০ থেকে ৭০০ বস্তা চিনি বিক্রি হতো। এখন সপ্তাহে ২০০ বস্তা চিনি বিক্রি করতেও কষ্ট হচ্ছে। দাম বাড়ার পর থেকে চিনির বিক্রি কমে গেছে বলে জানান তিনি।

চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, সরকারের সম্মতিতে বাজারে এখন প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৮ টাকায়। আর খোলা চিনি ৫০ কেজির বস্তার দাম ৫ হাজার ১০০ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ে ১০২ টাকা।

তবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বাজারে চিনি মিলছে না। পাইকারিতে প্রতি বস্তা চিনি (৫০ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৩০০ থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনির দাম একেক বাজারে একেক রকম। বেশি দামেও পাড়া-মহল্লায় চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে যে চিনি বিক্রি হচ্ছে না, তার প্রমাণ মেলে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরেও। টিসিবি বলছে, বাজারে এখন প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়।

রাজধানীর নিউমার্কেট বাজারে গতকাল চিনি কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আসিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দাম বেড়ে যাওয়ার পর চিনি কেনা কমিয়ে দিয়েছি। তাতে খরচ কিছুটা বেঁচে যাচ্ছে। আগে মাসে চার–পাঁচ কেজি চিনি লাগত। ব্যবহার কমানোর পরে এখন মাসে তিন–চার কেজি কিনলেই হয়।’

মিল থেকে বাজারে চিনির সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও পাইকারিতে চিনির বেচাকেনা কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।