এই বাজেট প্রগতিশীল ও ব্যবসাবান্ধব: ফিকি
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে প্রগতিশীল ও ব্যবসাবান্ধব আখ্যা দিয়েছে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) ফিকি। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির করপোরেট করহার-নগদ লেনদেনের শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ফিকি তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এই করহার হ্রাসের প্রস্তাব বেসরকারি বিনোয়োগ উৎসাহিত করবে বলে আশা করছে ফিকি।
বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেই বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এসব কথা বলেছে ফিকি।
প্রস্তাবিত বাজেটে কর সংস্কারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। করের আওতা ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি, ইলেকট্রনিক ফিস্ক্যাল ডিভাইস প্রবর্তন ও কর সংগ্রহ সহজতর করতে এবং খরচ কমাতে ই-পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে যে প্রচারণার কথা প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, তার প্রশংসা করেছে ফিকি। করদাতাদের সংখ্যা ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখে উন্নীত করার যে আশা করা হচ্ছে, তাতে দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে এবং করব্যবস্থার ধারাবাহিকতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে বলে মনে করছে ফিকি।
স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের ৮ শতাংশ এবং শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের ১২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফিকি বিশ্বাস করে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় উচ্চ হারে বরাদ্দ সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়নের অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করবে। এতে স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার অধিকার সম্প্রসারিত হবে। ফলে দেশে দক্ষ ও স্বাস্থ্যবান জনগোষ্ঠী তৈরি হবে, দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য যা অপরিহার্য বলে তারা মনে করে।
কর প্রশাসনের দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ডিজিটালাইজেশন দরকার; সে জন্য সম্পদ বরাদ্দ অপরিহার্য। এই উদ্দেশ্যে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত তথ্য বিশ্লেষণ, ইলেকট্রনিক কর জমাদান ব্যবস্থা এবং করদাতাদের জন্য উন্নত ডিজিটাল ইন্টারফেস বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত। এই ডিজিটাল রূপান্তর বাজেটের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে ফিকি।
পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে কর-জিডিপি অনুপাত বর্তমান ৮ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। ফিকি মনে করছে, উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের জন্য সর্বোচ্চ করহার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত অনুক্রমিক করব্যবস্থা তৈরিতে সহায়তা করবে। যদিও এ সিদ্ধান্তে মানুষের ব্যয় করার মতো অর্থ কমে যাবে; ফলে মানুষের ব্যয় ও সঞ্চয়ে প্রভাব পড়বে। মূল্যস্ফীতির জন্য করমুক্ত আয়ের সীমায় সামঞ্জস্য আনা হলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ব্যক্তিদের আর্থিক চাপ বাড়তে পারে।
ফিকি কাস্টমস অ্যাক্ট ২০২৩ প্রবর্তনকে স্বাগত জানায়, কিন্তু ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলে এই আইন কার্যকর করা সম্ভব হবে না।