রাজস্ব আদায় কঠিন হবে, মূল্যস্ফীতি স্পর্শকাতর: এফবিসিসিআই

এফবিসিসিআইছবি: সংগৃহীত

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে বলে মনে করে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটি বলেছে, ব্যাংক থেকে সরকারের অতিরিক্ত ঋণনির্ভরতা ব্যবসায়ীদের কষ্টে ফেলবে। মূল্যস্ফীতিকে স্পর্শকাতর হিসেবে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই বলেছে, এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

তবে প্রস্তাবিত বাজেটকে জনকল্যাণমুখী বলে অভিহিত করেছে এফবিসিসিআই বা বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন। সংগঠনটি বলছে, এবারের বাজেট যৌক্তিক, বাস্তবসম্মত এবং বাস্তবায়নযোগ্য।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মতিঝিলের নিজস্ব কার্যালয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়া বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটি বলেছে, বর্তমান বিশ্বে নানা ধরনের সংকট বিরাজ করছে। নানা সীমাবদ্ধতা, চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতার মধ্যে সরকার গণমুখী বাজেট দিয়েছে।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, গত কয়েক বছর দেখা গেছে যে বাজেটের আকার ১০ থেকে ১২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এবার তা ৫ শতাংশের কম বেড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নতুন বাজেটের আকার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি অবশ্যই যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত। সরকার ও বেসরকারি খাত সবাই মিলে চেষ্টা করলে এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য।

তবে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি খুবই স্পর্শকাতর। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ঘরে রয়েছে। সরকার প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতিকে সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। আমি মনে করি, মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।’

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আরও বলেন, ‘বাজেটে আমরা ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে চার লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা অপরিবর্তিত রেখেছে।’ এটিকে সাড়ে চার লাখ টাকা করার অনুরোধ জানান তিনি।

এফবিসিসিআই বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। মাহবুবুল আলম বলেন, এবারের বাজেটে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আদায় কঠিন। তবে করের আওতা যদি বাড়ানো হয় তাহলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। কিন্তু শুধু যাঁরা কর দিচ্ছেন, তাঁদের ওপরই নির্ভরশীল থাকলে কর আদায়ের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে।

শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনটির মতে, সরকারের নেওয়া অতিরিক্ত ব্যাংকঋণের কারণে ব্যবসায়ীদের কষ্ট হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই প্রস্তাব অনেক বেশি। সরকার ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ঋণ নিলে ব্যবসায়ীদের ঋণ পাওয়া জটিল হবে, কষ্টকর হবে। ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল না থেকে বিদেশ থেকেও ঋণ নিতে পারলে ভালো হবে বলে মত দেয় সংগঠনটি।

এক প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট এবং হাজার সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন ও জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার জনকল্যাণমুখী বাজেট দিয়েছে।

মাহবুবুল আলম জানান, আগামীকাল শুক্রবার এফবিসিসিআইয়ের সভা আছে। বোর্ড ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলে শনিবার তাঁরা প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বিস্তারিত পর্যালোচনা তুলে ধরবেন।