সংশোধিত এডিপিতে কমছে বরাদ্দ, বাড়ছে প্রকল্পের সংখ্যা

চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার ১৮ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার এনইসি সভায় এই সংশোধিত এডিপি পাসের জন্য উত্থাপনের কথা।

এডিপি

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এবারও বড় ধরনের কাটছাঁট হচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এডিপির আকার এবার কমানো হচ্ছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। গতবারও কমানো হয়েছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) আজ মঙ্গলবারের সভায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি পাসের জন্য উত্থাপনের কথা রয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারের প্রস্তাবিত সংশোধিত এডিপির আকার কমে দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সংশোধিত এডিপির যে আকার নির্ধারণ করা হয়েছে, এনইসির সিদ্ধান্তে তাতে কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। তবে সংশোধিত এডিপিতে টাকার পরিমাণ কমলেও প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েছে। সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্প রয়েছে ১ হাজার ৪৮৮টি। মূল এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৯২টি। নতুন নতুন প্রকল্প বেশি পাস হওয়ায় সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা।

কোন বছর কত কমল

গত ১০ বছরের সংশোধিত এডিপি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের এডিপির আকার ছিল ৮৬ হাজার কোটি টাকার। পরে তা কমিয়ে ৭৭ হাজার ৮৩১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। এরপরের ১০ বছরে প্রতিবছরই ৪ হাজার কোটি টাকা থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত এডিপির আকার কমানো হয়েছে। কোভিড শুরু হওয়ার পর ২০২০-২১ অর্থবছর ছাড়া প্রতিবছর ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি কাটছাঁট করা হয়েছে উন্নয়ন কর্মসূচিতে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, এবারের সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি সহায়তা থেকে কমছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। তাতে উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিদেশি সহায়তার পরিমাণ কমে দাঁড়াচ্ছে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর দেশজ উৎসের অর্থ কমছে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। তাতে সংশোধিত এডিপিতে দেশজ উৎস থেকে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ কমে দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ের হিসাবে গত এক যুগের মধ্যে চলতি অর্থবছরই সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) এডিপির মাত্র ২৭ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এ সময় খরচ হয়েছে ৭৪ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।

মূলত রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবে এডিপি বাস্তবায়নে এমন দশা।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এবার জাতীয় নির্বাচনের কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে এডিপি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এডিপি কাটছাঁট করতে হবে, সেটি জানাই ছিল। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগের তিন মাস এবং পরের তিন মাস প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি শ্লথ থাকে। আশিকুর রহমান আরও মনে করেন, এ ছাড়া রাজস্ব আদায় ও প্রকল্প বাস্তবায়নে কাঠামোগত সমস্যাও আছে।