টোল–মাশুল বেড়েছে দেশের সব স্থলবন্দরে

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরফাইল ছবি

দেশের সব স্থলবন্দরের সেবা মাশুলের পরিমাণ বেড়েছে। প্রতিটি সেবার বিপরীতে কর, টোল, মাশুলের পরিমাণ আগের চেয়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে নতুন এই মাশুল কার্যকর করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করলে কিছুটা বেশি মাশুল পরিশোধ করতে হয়। এই মাশুল অন্য স্থলবন্দরের জন্য কিছুটা কম। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে প্রজ্ঞাপনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবছরই মাশুলের পরিমাণ ৫ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়।


বেনাপোল স্থলবন্দরে ২৭ ধরনের সেবার বিপরীতে মাশুল আদায় করা হয়। জরুরি কিছু সেবার জন্য কত মাশুল বাড়ল, তা দেখা যাক। যেসব যাত্রী বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করবেন, তাঁদের জন্য ২০২৩ সালে মাশুলের পরিমাণ ছিল ৪৫ টাকা ১৬ পয়সা। এবার বাড়িয়ে ৪৭ টাকা ৪১ পয়সা করা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরি প্রবেশ করলে এখন ১৬৭ টাকা ৫২ পয়সা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১৫৯ টাকা ৫৪ পয়সা। মোটর কার, জিপ, পিকআপ, থ্রি–হুইলারের জন্য মাশুল ১০০ টাকা ৫১ পয়সা। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলের জন্য নতুন মাশুল ৩৩ টাকা ৫১ পয়সা।
বেনাপোল স্থলবন্দরে ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহারের মাশুল প্রায় ৫ টাকা। এখন ট্রাক, লরি ওজনে দিতে হবে ৮০ টাকা ৪১ পয়সা। অন্যদিকে কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণ মাশুল ১৭৭ টাকা। কোনো যানবাহন ইয়ার্ডে সারা রাত থাকলে ১০১ টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া গুদামে পণ্য রাখলে তার মাশুল বেড়েছে পণ্য রাখার সময় অনুযায়ী। এভাবে সব ধরনের মাশুলের পরিমাণই বেড়েছে।


বেনাপোল ছাড়া অন্য স্থলবন্দরগুলোতেও মাশুল বেড়েছে ৫ শতাংশ হারে। যেমন চাল, গম, চিনি, হলুদ, মরিচ—এসব ভোগ্যপণ্য আমদানিতে প্রতি টনে ৭০ টাকা মাশুল দিতে হবে। আগে এ হার ছিল ৬৬ টাকা। তুলা ও সুতা আমদানিতেও সমপরিমাণ মাশুল আরোপিত হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দর ছাড়া অন্য বন্দর দিয়ে আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির জন্য এখন ১৩৯ টাকা ৩০ পয়সা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১৩২ টাকা ৬৭ পয়সা। মোটর কার, জিপ, পিকআপ, থ্রি–হুইলারের জন্য মাশুল ৬৯ টাকা ৬৯ পয়সা। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলের জন্য নতুন মাশুল ১৬ টাকা ৭১ পয়সা।
একটি স্থলবন্দরের দায়িত্বে থাকা একজন সহকারী পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, স্থলবন্দরের আয়ের উৎস এসব মাশুল। প্রতিষ্ঠানের খরচ বাড়ছে। প্রতিবছরই মাশুল বাড়ানো হয়। এবারও বাড়ানো হয়েছে।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ বছরে স্থলবন্দরের আয় ২৭ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আয় হয়েছে ২৬৮ কোটি টাকা। এর আগের বছর আয়ের পরিমাণ ছিল ২৭২ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২১১ কোটি টাকা আয় করেছিল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২০৩ কোটি টাকা এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৬৩ কোটি টাকা।