ভর্তুকি ও খেলাপি ঋণ কমানোর পরামর্শ

আইএমএফ

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রেখেছে সরকার। জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের জন্য এ ভর্তুকি রাখা হয়েছে। অর্থনীতির চলমান বাস্তবতায় বিশাল এ ভর্তুকি কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল।

দলটি বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ কমানো এবং ব্যাংক খাতে সুশাসন বৃদ্ধিরও পরামর্শ দিয়েছে। তবে আইএমএফ আশা করে, কর-জিডিপির অনুপাত অন্তত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হোক আর গ্যাস-বিদ্যুতের দামের যৌক্তিক পর্যায়ে সমন্বয় করা দরকার।

বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে ঢাকা সফররত আইএমএফের স্টাফ মিশন গত রোববার ও গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আইএমএফের এশীয়–প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বাধীন দলটি ৯ দিনের সফরে ঢাকায় আসে বৃহস্পতিবার। দলটি কাল বৈঠক করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে। সূত্রগুলো জানায়, এবারের সফরে আইএমএফের দলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় কর সংগ্রহের হার বৃদ্ধির বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া। কর-জিডিপির অনুপাত মাত্র ১০ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে অন্তত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে, এটা তারা আশা করে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দলটি অপেক্ষায় আছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক করার। মুস্তফা কামাল চিকিৎসার জন্য এখন বিদেশে আছেন। আগামীকাল বুধবার তাঁর ফেরার কথা। দলটি ২১ জুলাই পর্যন্ত বৈঠক করবে এবং ফিরে যাবে ২২ জুলাই।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে যে ২০২৬ সালে বেরিয়ে যাবে এবং এতে যেসব সম্ভাব্য ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে, সেগুলোর প্রস্তুতি জানতে চেয়েছে অর্থ বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জানতে চেয়েছে ব্যাংক খাতের সংস্কার নিয়ে।

আইএমএফের সফররত দল বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেনি বলে জানা গেছে। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, ঋণ-জিডিপি এখন ৪১ শতাংশ। দলটির পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় চার হাজার কোটি ডলারে নেমে গেলেও ঝুঁকির পর্যায়ে যায়নি। তবে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকতে হবে।

অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, আইএমএফ থেকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চায় সরকার। এ ঋণ পেতে গেলে তাদের কিছু শর্তও মানতে হবে। তার অংশ হিসেবে আজই (গতকাল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের পথেও যাওয়া হবে।