একটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত না, ১০ টাকার নিচেও নামবে না

ডিম
ফাইল ছবি: এএফপি

উৎপাদন খরচসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় একটি ডিমের খুচরা দাম ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত না বলে জানিয়েছেন এ খাতের করপোরেট ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, বড় খামারি পর্যায়ে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ এখন ১০ টাকা ৩১ পয়সা। ছোট খামারিদের ক্ষেত্রে যা ১০ টাকা ৭৫ পয়সা। সব বিবেচনায় এখনই দেশে ডিমের দাম ১০ টাকার নিচেও নামবে না বলে মনে করেন এ খাতের বড় ব্যবসায়ীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তাঁরা।

অনুষ্ঠানে বিপিআইসিসি সভাপতি শামসুল আরেফিন বলেন, ‘একটি ডিম ১২ টাকার বেশি বিক্রি করলে তাদের ধরা উচিত। তবে ডিমের দাম কখনো ১০ টাকার নিচে নামবে বলে মনে হয় না। কারণ, ডলার যখন ৮৬ টাকা ছিল তখন প্রতিটি ডিম ৯ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করা হতো। বর্তমানে ডলারের দাম সরকারিভাবে ১০৯ টাকা হলেও ব্যাংক বিক্রি করছে ১১৩ থেকে ১১৪ টাকায়। ফলে ডলারের দাম ভবিষ্যতে কখনো ১০০ টাকার নিচে নামবে বলে মনে হয় না। ডিমের দামও আর ১০ টাকা হবে না।’

বিপিআইসিসির সভাপতি আরও বলেন, ‘চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি দেখা দিলেই বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এখন খুঁজে বের করতে হবে কারা এর সঙ্গে জড়িত। আর মুরগির খাদ্যের কাঁচামাল ও ওষুধ আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিলে মুরগি ও ডিমের দাম অবশ্যই কমানো সম্ভব। তবে তার জন্য একটু সময় লাগবে। সরকারের সঙ্গে এখন আমরা নিয়মিত বসছি। আশা করছি তার একটি ফলাফল বাজারে পড়বে। দামের যে ওঠানামা হয়, সেটাও বন্ধ হবে। 

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি কাজী জাহিন হাসান বলেন, সিন্ডিকেটের অভিযোগ ঠিক নয়। ডিম ও মুরগির দাম কেউ নিয়ন্ত্রণ করে না। এটা নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। এখন ডিমের জোগান কমেছে। ডিম ধরে রেখে দাম বাড়ানো সম্ভব নয়। খামারি ডিম ধরে রাখলে উল্টো তার লোকসান হয়। কারণ, তখন তার কাছে ডিমের মজুত বেড়ে যাবে। পরে দাম কম পায়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডিমের উৎপাদন কমে এসেছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, করপোরেট পর্যায়ে এখন ডিমের উৎপাদন হচ্ছে ৬০ লাখের মতো। আর ছোট খামারি পর্যায়ে ৩ কোটি ৩৩ লাখ। সব মিলিয়ে ডিমের উৎপাদন ৪ কোটির নিচে। 

অনুষ্ঠানে ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, অনেকগুলো পণ্যের সমন্বয়ে মুরগির খাবার তৈরি করতে হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ উপকরণই আমদানি করতে হয়। ডলারের কারণে আমদানি খরচ বেড়েছে। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএবি সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, অ্যানিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সায়েম উল হক, ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সহসভাপতি মো. তৌহিদ হোসেন, ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম প্রমুখ।