দেশের মোট সম্পদের এক-চতুর্থাংশই ১% ধনীর হাতে

দেশে মোট সম্পদের কেবল ৪ দশমিক ৭ শতাংশের মালিকানা রয়েছে ৫০ শতাংশের হাতে। জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের কাজে থাকা এই শ্রমিকরা সেই ৪ দশমিক ৭ শতাংশের মধ্যে রয়েছেনফাইল ছবি: সাইয়ান

বাংলাদেশে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে আয় এবং সম্পদের বণ্টনে অসমতা এক দশক ধরে একই রকম আছে। জাতীয় আয়ের বড় অংশই ধনী শ্রেণির মানুষের পকেটে চলে যাচ্ছে। স্বল্পসংখ্যক ধনীর হাতেই রয়েছে বেশি সম্পদ।

প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিকসের বৈশ্বিক অসমতা প্রতিবেদন ২০২৬ সালে দেখা গেছে, দেশের মোট সম্পদের ৫৮ শতাংশের মালিকানা সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষের হাতে। এর মধ্যে শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর কাছেই রয়েছে মোট সম্পদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। আর ৪ দশমিক ৭ শতাংশ সম্পদের মালিকানা ৫০ শতাংশের হাতে।

আয়ের ক্ষেত্রেও অসমতা প্রায় একই রকম। জাতীয় আয়ের প্রায় ৪১ শতাংশই চলে যায় শীর্ষ উপার্জনকারী ১০ শতাংশ মানুষের হাতে। অন্য দিকে নিম্ন আয়ের ৫০ শতাংশ মানুষের সম্মিলিত আয় মাত্র ১৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক দশকে দেশের সবচেয়ে ধনী ও সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের আয়ের ব্যবধান সামান্যই কমেছে। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই ব্যবধান ২২ থেকে কমে ২১ হয়েছে।

বৈশ্বিক অসমতা প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের মানুষের বার্ষিক গড় মাথাপিছু আয় ৬ হাজার ১০০ ইউরো বা ৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৫৪ টাকা (ক্রয়ক্ষমতা সমতার ভিত্তিতে)। আর গড় সম্পদ ৩০ হাজার ইউরো বা ৪২ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ টাকা (ক্রয়ক্ষমতা সমতার ভিত্তিতে)।

অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো বেশ কম, মাত্র ২২ দশমিক ৩ শতাংশ। এটি অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী লিঙ্গবৈষম্যের ইঙ্গিত হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এতে আরও বলা হয়, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বৈষম্যের চিত্রে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। আয় ও সম্পদ বণ্টনে ভারসাম্য আনতে যে ধরনের অগ্রগতি দরকার, তা এখনো সীমিত।

১০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বিশ্বে আয় ও সম্পদ বণ্টনে বৈষম্যের চিত্রটিও ফুটে উঠেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বে ব্যক্তিগত সম্পদের তিন–চতুর্থাংশই রয়েছে ১০ শতাংশ ধনীর হাতে। তার মধ্যে ৩৭ শতাংশ আবার ১ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে।