রুপির আরও দরপতনের শঙ্কা

রুপি
প্রতীকী। ছবি: রয়টার্স

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই ডলারের সাপেক্ষে রেকর্ড দরপতন হয়েছিল ভারতীয় রুপির। আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদ বৃদ্ধি চালিয়ে গেলে সেই ধারা বজায় থাকবে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ইতিমধ্যেই রুপির পতনের কারণে বেড়েছে আমদানি ব্যয়, যার জেরে বাণিজ্যঘাটতি রেকর্ড অঙ্কে পৌঁছেছে।

এদিকে বুধবার সরকারি পরিসংখ্যানে প্রকাশ, এপ্রিল-জুলাই প্রান্তিকে ভারতের রাজস্বঘাটতিও বাজেট লক্ষ্যমাত্রার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ স্পর্শ করেছে। কেন্দ্রের আশা, এবার রাজস্বঘাটতি জিডিপির ৬ দশমিক ৪ শতাংশে বেঁধে রাখতে অসুবিধা হবে না।

কর আদায় ৬ দশমিক ৬৬ লাখ রুপিতে পৌঁছানোয় অবস্থাও কিছুটা ভালো, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ফেডের সুদ বাড়ানোর বিরূপ প্রভাবে সে দেশে মন্দা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাঁদের মতে, এর প্রভাব পড়তে পারে ভারতেও। খবর ইকোনমিক টাইমস–এর

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডলারের সাপেক্ষে ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ দরপতন হয়েছে রুপির। কিছুদিন আগে ৮০-এর ঘর পার করা ডলারের দাম এখন ৭৯ দশমিক ৫২ রুপি। সেই পতন আটকাতে নিয়মিত মাঠে নামতে হয়েছে রিজার্ভ ব্যাংককে, যার জেরে ভারতের বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার গত বছরের সেপ্টেম্বরের ৬৪ হাজার ২০০ কোটি ডলারের রেকর্ড অঙ্ক থেকে এ বছর ১৯ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে নেমেছে ৫৬ হাজার ৪০৫ দশমিক ৩ কোটি ডলারে।

ডেলয়েট ইন্ডিয়ার অন্যতম অংশীদার পি এন সুদর্শন বলছেন, রুপির আরও দরপতন হওয়ার সম্ভাবনা আছে, কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি ও রপ্তানি শিল্প আবার এ ধরনের ধসেরই অপেক্ষায় থাকে। পিডব্লিউসির ভারতীয় অংশীদার রণেন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ফেডের বার্তায় ডলারের সাপেক্ষে সব দেশের মুদ্রার দরপতন হচ্ছে।

এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্ট মাসে ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের দরপতন হয়েছে ৫ শতাংশ। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে অর্থাৎ ব্রেক্সিট ভোটের পর পাউন্ডের এতটা দরপতন হয়েছিল।

এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রা ইয়েনেরও রেকর্ড দরপতন হয়েছে গতকাল। বিবিসির প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, গতকাল শুক্রবার ১৯৯৮ সালের পর অর্থাৎ ২৪ বছরের মধ্যে জাপানি মুদ্রা ইয়েনের সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে। গতকাল এই প্রতিবেদন লেখার সময় ১ ডলারের বিপরীতে ১৪০ দশমিক ১৪ ইয়েনে মিলেছে।

বিষয়টি হলো, বিশ্বের বাজারব্যবস্থা যখন অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে, অনিশ্চয়তায় ভোগে, বিনিয়োগকারীরা তখন নিরাপদ আশ্রয় খোঁজেন। মন্দার আশঙ্কা আর অস্থিরতা—এই বাস্তবতায় বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ডলারেই নিরাপত্তা খুঁজছেন।