চিনির শুল্ক কমাতে এবার এনবিআরকে চিঠি

চিনি
ফাইল ছবি

দেশে চিনির বাজারে অস্থিরতা এখনো কাটেনি। কারণ, নিয়ন্ত্রিত সরবরাহের ফলে বাজারে চিনির ঘাটতি রয়েছে। প্যাকেটজাত চিনি খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। এটি সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও বেশি দিয়ে ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে। সে জন্য বাজার স্বাভাবিক করতে এবার শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা ইতিমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে। চিঠি পেয়ে এনবিআরও হিসাব-নিকাশ শুরু করেছে। দ্রুতই আসতে পারে চিনির শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিনির শুল্ক কমানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। দ্রুত হয়তো সিদ্ধান্ত আসবে। তবে এটাও খেয়াল রাখতে হবে, শুল্ক কমানো হলে সরকারের রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়বে।’

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকাল মঙ্গলবারের বাজারদরের তালিকায় দেখা গেছে, ঢাকার বাজারে এখন প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা, যা এক বছর আগে ছিল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরে চিনির দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। চিনির শুল্ক না কমানো হলে সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা আছে ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাবি জানিয়েছেন, বর্তমানে চিনিতে যে কাঠামোয় শুল্ক আরোপ করা আছে, সেটি থেকে কমিয়ে নতুন কাঠামো করতে হবে, যাতে বাজারে চিনির দাম কমে আসে। এদিক মন্ত্রণালয়ের ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনাসংক্রান্ত টাস্কফোর্স’–এর চতুর্থ সভার নথিপত্র থেকে জানা গেছে, দেশীয় শিল্প রক্ষা করার জন্য চিনিতে ৩০-৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা আছে। সভায় শুল্ক কমানোর বিষয়ে এনবিআরকে অনুরোধ জানানোর আলোচনা হয়েছিল।

জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিনির ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহারে আমরা এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। বিষয়টি এনবিআর পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ছয়টি নিত্যপণ্য আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলায় ডলারের কোটা সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর দেওয়া ওই চিঠির উদ্দেশ্য ছিল, আসন্ন রমজান উপলক্ষে বাজারে যেন নিত্যপণ্যের সংকট তৈরি না হয়। সেখানে চিনির বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে ঋণপত্র খোলা অব্যাহত রাখার ব্যাপারেও বলা হয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা কমিয়ে আনতে নানাভাবে চেষ্টা করছে সরকার।