মূল্যস্ফীতি কমায় বড় অগ্রগতি হবে জুনের মধ্যে: গভর্নর
দেশে আগামী জুন মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমার ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি হবে বলে আশাবাদী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপগুলো কার্যকর হচ্ছে না বলে সমালোচনা শুনেছি। বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতেও এসব পদক্ষেপ নেওয়ার পর সুফল পেতে ১০ থেকে ১২ মাস সময় লাগে। আশা করছি, আগামী জুনের মধ্যে বড় অগ্রগতি হবে।’
আজ বুধবার প্রথম আলো আয়োজিত ‘ডিজিটাল লেনদেনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা: প্রেক্ষিত ভ্যাট বৃদ্ধি’ শীর্ষক আলোচনায় গভর্নর এসব কথা বলেন। এতে অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজস্ব খুব বাড়বে না- এমন মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, এই খাতের সংস্কার দরকার। এ সংস্কার করতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে। বর্তমান সরকার সংস্কারের কাজটা শেষ করতে পারবে না, তবে শুরু করে দিয়ে যেতে পারবে।
কর প্রশাসন ও করনীতি আলাদা করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে গভর্নর বলেন, এটা হওয়ার পর সারা বছর নীতি নিয়ে কাজ করা সম্ভব হবে।
ব্যাংকে আমানত রাখলে তিন হাজার টাকা করে কেন কেটে রাখা হবে- এমন প্রশ্ন তুলে এনবিআর চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে গভর্নর বলেন, এমন বিধান ব্যাংকে আমানত রাখতে মানুষকে নিরুৎসাহিত করে।
গভর্নর বলেন, মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং, যাই বলি না কেন- একে জনপ্রিয় করতে স্মার্টফোন সস্তা করতে হবে। এমএফএস বা ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ব্যবহারকারী বাড়লে করও বাড়বে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলা কিউআর কোড চালু করা হলেও জনপ্রিয় হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, একই ধরনের সেবায় ভারত পারলে বাংলাদেশ কেন পারবে না?
অনলাইনে কর ও শুল্ক দেওয়ার ব্যবস্থা চালুর পরামর্শ দিয়ে গভর্নর বলেন, এটা না করা গেলে রাজস্ব ব্যবস্থায় দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে না।
কয়েক বছর আগে তাঁর নিজের গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) রিটার্ন দাখিলের সময় এর ব্যবস্থাপককে ডেকে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন গভর্নর। তিনি বলেন, কর কর্মকর্তারা অবাধ ক্ষমতার অধিকারী। অবাধ ক্ষমতা দুর্নীতি বাড়িয়ে দেয়।
গভর্নর মনে করেন, পণ্য আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রি পর্যন্ত ১০ শতাংশের বেশি ভ্যাট থাকা হওয়া উচিত নয়, যা বর্তমানে ১৫ শতাংশ।