বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ খাতের জন্য বাস্তবসম্মত নীতি জরুরি

পলিসি এক্সচেঞ্জ আয়োজিত জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫: উচ্চ সম্ভাবনাময় খাতের জন্য অগ্রাধিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা। আজ ঢাকার একটি হোটেলেছবি: প্রথম আলো

আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশের কৃষি, তামাক, তৈরি পোশাক, নিত্যব্যবহার্য পণ্যের বাজার (এফএমসিজি), ডিজিটাল অর্থনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতের জন্য বাস্তবসম্মত নীতি নিশ্চিত করতে হবে।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল মঙ্গলবার ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫: উচ্চ সম্ভাবনাময় খাতের জন্য অগ্রাধিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ দাবি জানান। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সূচনা বক্তব্য দেন পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।

মাসরুর রিয়াজ বলেন, আর্থিক নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে উচ্চ সম্ভাবনাময় খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য জনকল্যাণের পাশাপাশি রাজস্ব বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলোকে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন। অভ্যন্তরীণ রাজস্বের ১২-১৩ শতাংশ জোগান দেয় তামাক খাত। তবে স্থানীয়ভাবে তৈরি সিগারেটের দাম অধিকাংশ দেশের তুলনায় কম। জনগণকে ধূমপান থেকে বিরত রাখতে ও রাজস্ব বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিগারেটের দাম বাড়াতে হবে।

এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেস ও মেশিনারিজ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এফ এইচ আনসারী বলেন, ‘কৃষি খাতে বর্তমানে তিনটি বিষয়ের ওপর সরকারকে নজর দিতে হবে। এগুলো হলো পরিবেশ ও জলবায়ুর পরিবর্তন, ফুড ভ্যালু চেইন ও আধুনিক প্রযুক্তি। এ ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান পাটোয়ারী বলেন, এনবিআরকে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভ্যাট আইনের অসংগতি দূর করতে হবে। যে উদ্দেশ্যে আইনটি করা হয়েছে, তা কাজে না এলে লাভ নেই। অসংগতি দূর করলে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়বে।

ডিজিকন টেকনোলজিসের এমডি ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘ডিজিটাল খাতে করারোপ করা হলে বাজার মন্থর হবে। এ ছাড়া প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের ডিজিটাল খাত পিছিয়ে পড়বে।’

কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য লুৎফুল হাসান বলেন, ‘কৃষিতে আমাদের উদ্দেশ্য হবে রপ্তানি বাড়ানো, আমদানি কমানো। তাই যতটা সম্ভব ভর্তুকি দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সাবেক বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসু বলেন, ‘করব্যবস্থায় ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। এতে সবাই কর দিতে আগ্রহী হবে। পরোক্ষ করের ওপর যত নির্ভরতা কমানো যায়, তত ভালো। এ জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সাবেক সদস্য অপূর্ব কান্তি দাস, বিজিএমইএর পরিচালক শামস মাহমুদ, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, নেসলে বাংলাদেশের ডিরেক্টর (লিগ্যাল, আরএসএ, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) দেবব্রত রায় চৌধুরী, স্নেহাশীষ-মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা অংশীদার স্নেহাশীষ বড়ুয়া, পিকার্ড বাংলাদেশ উপব্যবস্থাপনা পরিচালক অমৃতা মাকিন ইসলাম প্রমুখ।