বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কার শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল

শামসুল আলম

শ্রীলঙ্কার সংকট থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার কিছু নেই, বরং সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে শ্রীলঙ্কার শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল। কারণ, গত দেড় দশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় আমাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। আমরা তেমন কোনো ভুল করিনি। এ সময়ে আমরা এমন কোনো প্রকল্প নিইনি, যেটির ঋণ পরিশোধে দায় হতে পারে।

কিন্তু শ্রীলঙ্কা এমন ধরনের অনেক ভুল করেছে। পর্যালোচনা ছাড়া বহু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নিয়েছে। তাই দেশটি এখন সংকটে পড়েছে। অথচ শ্রীলঙ্কা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে এগিয়ে ছিল। শুধু শ্রীলঙ্কা নয়; আফগানিস্তান, তানজানিয়াসহ ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোরও উচিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।

দেশে কয়েক মাস ধরে ডলার–সংকট চলছে। এখন আস্তে আস্তে সেই পরিস্থিতি ঠিক হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ডলার–সংকট কেটে যাবে।
শামসুল আলম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

আমি বলব না, এ সময়ে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ নেই। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নানামুখী চ্যালেঞ্জ আছে। কিন্তু এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরিকল্পিতভাবে কৌশল নেওয়া হচ্ছে। আমাদের মাথার ওপর বড় ঋণের বোঝা নেই। আমরা বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে আছি। ইদানীং চলতি হিসাবের ভারসাম্য নেতিবাচক রয়েছে। এটি মাইনাস ৩ শতাংশ পর্যন্ত থাকলেও স্বস্তিদায়ক। এখন মাইনাস আড়াই শতাংশের মতো আছে। এখনো উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

দেশে কয়েক মাস ধরে ডলার–সংকট চলছে। এখন আস্তে আস্তে সেই পরিস্থিতি ঠিক হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ডলার–সংকট কেটে যাবে। এরই মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা পেতে চলেছি, যা দিয়ে বড় উন্নয়ন অবকাঠামো শেষ করা হবে।

গত দেড় দশকে সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা আরও সুসংহত ও পরিপক্ব হয়েছে। তবে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ডলার–সংকট ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিলাসপণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ, কৃচ্ছ্র সাধনসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গাড়ি আমদানি নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণ বন্ধ করা হয়েছে। আমদানিনির্ভর মালামালের প্রকল্প পাস করাও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।