ঈদের আগে ভ্যাট না বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
সামনের রোজার ঈদের আগে ভোগ্যপণ্য কেনাকাটার ওপর নতুন করে কর আরোপ না করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ, রমজানে মাসে সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা হয়। আর ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় থাকেন এই মাসের জন্য।
আজ বুধবার প্রথম আলো আয়োজিত ‘ডিজিটাল লেনদেনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা: প্রেক্ষিত ভ্যাট বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে অতিথির বক্তব্যে ব্যবসায়ীরা এমন দাবি জানান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘প্রক্রিয়াজাত করা খাদ্যে নতুন করে করের বোঝা চাপাবেন না। ২৫ টাকার জুসে ৮ টাকা ভ্যাট-কর দিতে হয়। কর আরও বাড়ালে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে। করসহ নানা খরচ বাড়ানোর কারণে ভারতীয় সুতায় বাংলাদেশ ভেসে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের হাত-পা বেঁধে সাগরে সাঁতরাতে নামিয়ে দেবেন না।’
পোশাকের ব্র্যান্ড লা-রিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মন্নুজান নার্গিস বলেন, হঠাৎ করে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হলো। এবার যখন বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন আমাদের গুদামে এক লাখ পিস পণ্য ছিল। এত পণ্যের নতুন ভ্যাট হারসহ দাম নির্ধারণ করা একটা জটিল প্রক্রিয়া। পরে আবার ভ্যাট কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হলো। এ জন্য কোনো বাড়তি সময়ও দেওয়া হয়নি। ফলে ব্যবস্থাপনা করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। রমজানের আগে ভালো পরিমাণে পণ্য বিক্রি হয়। এ জন্য রমজানের আগে নতুন হার কার্যকর না করলে ভালো হয়। ভোক্তার ওপর বাড়তি চাপ লাঘব হয়।
মন্নুজান নার্গিস আরও বলেন, ‘এখন ব্র্যান্ড ও নন–ব্র্যান্ডের মধ্যে দুই ধরনের ভ্যাট নির্ধারণ করা হয়েছে। যারা বিদেশ থেকে পণ্য এনে বিক্রি করবে, তারা নন–ব্র্যান্ড। অন্যদিকে আমরা দেশে পণ্য উৎপাদন করব, এতে কর্মসংস্থান হবে, আমাদের জন্য ভ্যাটের হার ১০ শতাংশ। এটা কীভাবে হলো, আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।’
ভ্রমণ এজেন্ট শেয়ারট্রিপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সাদিয়া হক বলেন, বাংলাদেশের ভ্রমণ খাতের জন্য যেসব বিধিবিধান করা আছে, সেগুলো মেনে ব্যবসা করা প্রায় অসম্ভব। হজ ও ওমরাহ বাদে অন্যান্য ভ্রমণে ভ্যাট ও ট্যাক্স দিতে হয়। সেটা না থাকলে এই খাত অনেক প্রণোদনা পেত। ভ্রমণকে বৃহত্তর অর্থনীতির অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হলে শুধু যে বাংলাদেশ থেকে বাইরে যাওয়া বাড়বে তা নয়, বরং বিদেশ থেকে দেশেও মানুষের আসা বাড়বে।