আগামী বাজেটে সরকার আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেবে

বাজেটছবি: প্রথম আলো

দেশের অর্থনীতি নানামুখী সংকটে। এ সংকট একদিকে দেশীয়, আরেকদিকে বৈশ্বিক। সামস্টিক অর্থনীতির এমন কোনো সূচক নেই, যা ইতিবাচক। এই পরিস্থিতি সামনে নিয়েই শেষ হতে চলছে ২০২৩-২৪ অর্থবছর। ইতিমধ্যে অর্থবছরের দশম মাস শুরু হয়ে গেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ এখন চলমান। অর্থমন্ত্রী নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন।

বাজেট প্রণয়নকাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার–সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিলের বৈঠক। ঢাকায় সচিবালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তবে সূত্রগুলো জানায়, নতুন বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৫ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এ বাজেটে ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। এ ঘাটতি মেটানো হবে ঋণ নিয়ে। এর মধ্যে বিদেশ থেকে ১ লাখ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। বাকি ১ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে।
বৈঠক সূত্র বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বৈঠকে গুরুত্বসহকারে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়, সুদের হার যে এখন বাড়ছে, তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) একই জায়গায় আটকে আছে দেশ। রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও আশানুরূপ নয়। আবার আছে ভর্তুকির বাড়তি চাপ।

বৈঠকে চলতি ও আগামী অর্থবছরের বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রগুলো জানায়, আগামী বাজেট প্রণয়নেও সরকার সাশ্রয়ী থাকবে। এ কারণে চলতি বাজেটের তুলনায় আগামী বাজেটের আকার খুব বাড়ানো হবে না। বাড়তে পারে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। অথচ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটের আকার তার আগের অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছিল ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

সূত্রগুলো জানায়, আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।