আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া যেতে পারে ২৩ জুনের পর

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)ছবি: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক হতে পারে আগামী জুন মাসের শেষ সপ্তাহে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের সম্ভাব্য তারিখ ২৩ জুন এবং এ বৈঠকেই বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব উঠবে।

সূত্রগুলো জানায়, আইএমএফের পর্ষদে অনুমোদিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার পথ খুলবে এবং জুনের মধ্যেই তা পেয়ে যাবে বাংলাদেশ।

২৬ মে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে এ বিষয়ে সচিবালয়ে আলোচনা করে গেছেন আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান বলে গেছেন, বাংলাদেশ ঠিক পথেই আছে। জুনের মধ্যেই তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়া যাবে।

আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি চলছে। এ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় কিস্তির পরিমাণ আগের দুই কিস্তির সম্মিলিত অঙ্কের চেয়েও বেশি ১১৫ কোটি ডলার।

এর আগে ৮ মে ঋণের বিষয়ে দুই সপ্তাহব্যাপী দ্বিতীয় পর্যালোচনা শেষে আইএমএফের গবেষণা বিভাগের উন্নয়ন সামষ্টিক অর্থনীতি শাখার প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে ক্রিস পাপাজর্জিও বলেছিলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হতে বাংলাদেশকে বাণিজ্য বহুমুখীকরণে যেতে হবে; সেই সঙ্গে আরও বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি ও সুশাসনে নজর দিতে হবে। কর সংগ্রহে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং সে জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল প্রণয়নের পরামর্শও দেন তিনি।

এদিকে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ হবে বলে জানিয়ে গেছে আইএমএফ। সংস্থাটির মতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, সামষ্টিক অর্থনীতি ধীরে ধীরে টেকসই হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপও কমবে। বাড়বে আমদানি।

অনেক শর্ত পূরণ করার পথে থাকলেও ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর আইএমএফের বেঁধে দেওয়া রিজার্ভের ত্রৈমাসিক কোনো লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়া যায় কি না। যদিও বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফের দল চলতি মাসে রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেয়।

আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের দেওয়া নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে; সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ৫৩৬ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪ শতাংশ হলেও আগামী অর্থবছরে তা ৭ দশমিক ২ শতাংশে নামতে পারে বলে প্রক্ষেপণ করেছে আইএমএফ।