ভারত থেকে ছয় পণ্য আমদানির কোটা নির্ধারণে কমিটি গঠন
ভারত থেকে কোন নিত্যপণ্য আমদানিতে কী পরিমাণ কোটা চাওয়া হবে, সেটি ঠিক করতে মঙ্গলবার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কমিটির প্রধান করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিত্যপণ্যগুলোর ১০ বছরের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভারতের কাছে কোটা-সুবিধা চাওয়া হবে। পণ্যগুলো হচ্ছে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা। ভুটান ও মালদ্বীপকে এ কোটা-সুবিধা দিয়ে আসছে ভারত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার এ বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন থেকে একজন করে প্রতিনিধি কমিটিতে মঙ্গলবারই নির্বাচন করা হয়েছে।
নয়াদিল্লিতে গত ২২-২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডাল আমদানিতে বার্ষিক কোটা চেয়েছে বাংলাদেশ। কোটা পাওয়া গেলে ভারত যখন-তখন বাংলাদেশে এসব পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারবে না।
বৈঠক শেষে দেশে ফিরে গত ২৭ ডিসেম্বর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছিলেন, ‘ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ ও গম রপ্তানি বন্ধ করায় মধ্যে সমস্যা হয়েছিল। কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য খাদ্যসংকটের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ভারতের কাছে তাই এসব পণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা-সুবিধা চাওয়া হয়েছে। আমরা যা চেয়েছি, তা তারা দিতে পারবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু আমরা যদি পরে তা আমদানি না করি, তখন কী হবে, এমন প্রশ্ন করেছে তারা।’
বাণিজ্যমন্ত্রী সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘উভয় পক্ষকে বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে ভারত। আরও বলেছে, আমাদের যা প্রয়োজন তা তারা দেবে।’
কোটা-সুবিধার অনুরোধের পাশাপাশি পণ্যের পরিমাণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল ওই বৈঠকে। ভারত তখন বলেছিল, পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে আন্দাজের ভিত্তিতে। কোন পণ্য বাস্তবে কত পরিমাণ লাগবে, তা নির্ধারণ করতে হবে। সাত থেকে আট বছরের রেকর্ড বলে না যে এত পণ্যের দরকার হবে বাংলাদেশের।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গম ৪৫ লাখ, চাল ২০ লাখ, পেঁয়াজ ৭ লাখ, চিনি ১৫ লাখ ও আদা দেড় লাখ টন এবং ডাল ৩০ হাজার ও রসুনের ১০ হাজার টন কোটা রাখার অনুরোধ করা হয় ভারতের কাছে।
বাণিজ্যসচিব বলেন, ১০ শতাংশ কম বা বেশি উল্লেখ করে একটি পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রস্তাব পাঠানো হবে ভারতে। এসব পণ্য আমদানি করবে বেসরকারি খাত। তাই পরিমাণ নির্ধারণ করা কঠিন। ডাল রপ্তানির ব্যাপারে ভারত আশ্বাস দেয়নি। কারণ, পণ্যটি তাদেরই মাঝেমধ্যে আমদানি করতে হয়। এ জন্য সাত থেকে কমিয়ে শেষ পর্যন্ত ছয় পণ্যের ব্যাপারে প্রস্তাব পাঠানো হবে।