চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ওএমএসসহ বিভিন্ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু থাকায় নওগাঁর মোকামে দুই সপ্তাহ ধরে মোটা চালের দাম নিম্নমুখী। মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণা, বিআর-৫১, বিআর-৪৯ চালের দাম দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি। এখন সেই দাম কমে হয়েছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা। তবে সরু চাল হিসেবে পরিচিত নাজিরশাইল, কাটারিভোগ ও পাইজাম চালের দামও কমেছে। আর ৫০ কেজির প্রতি বস্তা সুগন্ধি আতপ চালের দাম বেড়েছে ২০০–৩০০ টাকা পর্যন্ত।

এক মাস ধরেই নওগাঁর মোকামে ক্রেতার সংখ্যা কম। মোকামে চাল বিক্রি কমে যাওয়ায় মিলের মালিকেরা বাজার থেকে ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে বাজারে ধানের দাম প্রতি মণে ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
ফরহাদ হোসেন চকদার, সাধারণ সম্পাদক, নওগাঁ চালকল মালিক গ্রুপ

দেশের অন্যতম বড় চালের মোকাম নওগাঁয় ৮০টি স্বয়ংক্রিয় (অটো) চালকল রয়েছে। আর হাস্কিং মিল রয়েছে ১ হাজার ১৬০টি। নওগাঁর বাজারে চালের দামের প্রভাব পড়ে সারা দেশে।  গত শুক্রবার নওগাঁর বৃহত্তম চালের মোকাম সদর উপজেলার মিলগেটে প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৪-৪৫ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে এই চাল ৪৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া সরু চাল হিসেবে পরিচিত পাইজাম চালের দাম কেজিতে ২ টাকা কমে ৬১-৬২ টাকা, কাটারি ও জিরা নাজির চালের দাম কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে এসব সরু চালের কেজি ছিল ৭০ থেকে ৭২ টাকা। এ ছাড়া সুগন্ধি আতপ চালের দাম কেজিতে ৬ টাকা বেড়ে মিলগেটেই এখন বিক্রি হচ্ছে ১২৮ থেকে ১৩০ টাকায়।

পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়া-কমার প্রভাব পড়েছে নওগাঁর খুচরা বাজারেও। গত শুক্রবার নওগাঁর পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজারে খোঁজ নিয়ে যায়, মানভেদে প্রতি কেজি মোটা ও সরু চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

খুচরা চাল বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান কিরণ ট্রেডার্সের মালিক মোহন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এবার পুরো আমন মৌসুমেই চালের বাজার স্থিতিশীল ছিল। ওএমএসে কম দামে সরকারের চাল বিক্রি অব্যাহত থাকায় বাজারে তার প্রভাব পড়েছে।

নওগাঁ চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু রেখেছে। এ কারণে এক মাস ধরেই নওগাঁর মোকামে ক্রেতার সংখ্যা কম। মোকামে চাল বিক্রি কমে যাওয়ায় মিলের মালিকেরা বাজার থেকে ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে বাজারে ধানের দাম প্রতি মণে ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এ কারণে পাইকারিতে মোটা ও সরু চালের দাম কমেছে। তবে আতপ চালের দাম বাড়তি।’