ভোজ্যতেলের দাম দ্রুত সমন্বয়ের দাবি

বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের বড় ধরনের দরপতন হলেও দেশের বাজারে দাম কমছে ধীরগতিতে। দাম সমন্বয়ের এ অহেতুক বিলম্ব কার স্বার্থে করা হচ্ছে, এমন প্রশ্ন তুলে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম দ্রুত সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়।

গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাবের এ শাখা কার্যালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দেন আমদানিকারকেরা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দীর্ঘদিনেও দেশের বাজারে পণ্যটির দাম সমন্বয় হয় না। দাম কমলে ব্যবসায়ীরা উল্টো সুর দেন ও নানা অজুহাত দেখান বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করছে উল্লেখ করে কমিশনের কাজকে একপক্ষীয়, আইনের বরখেলাপ ও ভোক্তাস্বার্থবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ভোজ্যতেলের দাম তিন দফায় বাড়ানো হয়েছে।

‘বিবৃতিটি চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে পাঠানো হলেও ভোক্তাস্বার্থের প্রশ্নে এ দাবির সঙ্গে আমরা একমত। কিছুদিন আগে সয়াবিন তেলে ৩ শতাংশের মতো দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এটা আসলে ভোক্তার স্বার্থের পক্ষে বড় প্রভাব রাখতে পারেনি। এখন যেহেতু বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেশ কমেছে, সেহেতু দেশের বাজারে সে অনুপাতে দাম সমন্বয় হওয়া প্রয়োজন।’
গোলাম রহমান,

বিষয়টি নিয়ে ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিবৃতিটি চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে পাঠানো হলেও ভোক্তাস্বার্থের প্রশ্নে এ দাবির সঙ্গে আমরা একমত। কিছুদিন আগে সয়াবিন তেলে ৩ শতাংশের মতো দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এটা আসলে ভোক্তার স্বার্থের পক্ষে বড় প্রভাব রাখতে পারেনি। এখন যেহেতু বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেশ কমেছে, সেহেতু দেশের বাজারে সে অনুপাতে দাম সমন্বয় হওয়া প্রয়োজন।’

এদিকে দেড় থেকে দুই মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম কমেছে ৩২ শতাংশ আর পাম তেলের দাম কমেছে ৪৮ শতাংশ। বিশ্ববাজারের এবারের ধস ২০০৮ সালকেও ছাড়িয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কমোডিটি এক্সচেঞ্জ শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধিত সয়াবিন তেলের দর উঠেছিল টনপ্রতি ১ হাজার ৯৫০ ডলার। সে সময় প্রতি ডলার ৮৬ টাকা হিসাবে লিটারপ্রতি দর দাঁড়ায় ১৫৩ টাকা। গত বৃহস্পতিবার এ দর নেমে আসে টনপ্রতি ১ হাজার ৩১৮ ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের বিনিময় মূল্যে (৯৩ টাকার ওপরে) লিটারপ্রতি দর দাঁড়ায় ১১৫ টাকার মতো।

‘বাজারে অস্থিরতা হ্রাস পাওয়ায় পাইকারি বাজারে পাম তেল সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০ থেকে ১২ টাকা কমে বিক্রি করতে পারছি। আবার বোতলজাত তেলের ক্ষেত্রেও লিটারপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা ছাড়ও দিচ্ছি। এতে ক্রেতাদের আস্থা ফিরছে।’
নাইম ইসলাম, কারওয়ান বাজারের রব স্টোরের বিক্রেতা

দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমতে শুরু করায় সরবরাহব্যবস্থায়ও শৃঙ্খলা ফিরেছে উল্লেখ করে কারওয়ান বাজারের রব স্টোরের বিক্রেতা নাইম ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজারে অস্থিরতা হ্রাস পাওয়ায় পাইকারি বাজারে পাম তেল সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০ থেকে ১২ টাকা কমে বিক্রি করতে পারছি। আবার বোতলজাত তেলের ক্ষেত্রেও লিটারপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা ছাড়ও দিচ্ছি। এতে ক্রেতাদের আস্থা ফিরছে।’