অর্থের বিনিময়ে টুইটার অ্যাকাউন্ট, বিজ্ঞাপন থেকে সরে আসবেন মাস্ক

ইলন মাস্ক
ফাইল ছবি

এবার টুইটারের বিজ্ঞাপন নীতি নিয়ে বাণী দিলেন কোম্পানিটির মালিক ইলন মাস্ক। গতকাল শনিবার এক টুইটে তিনি বলেছেন, কিছু কিছু অ্যাকাউন্ট উচ্চমূল্যের বিনিময়ে বিক্রি করা হবে এবং সেই সব অ্যাকাউন্টে বিজ্ঞাপন থাকবে কম।

টুইটে ইলন মাস্ক আরও বলেছেন, টুইটারে বিজ্ঞাপন অনেক বেশি আসে এবং তা টুইটারের রাজস্ব আয়ের বড় উৎস। এসব বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত বছরের অক্টোবর মাসে টুইটারের মালিকানা হাতে পাওয়ার পর থেকেই পরিবর্তনের ঝড় শুরু করেছেন মাস্ক। বলেছেন, বিজ্ঞাপন আয়ের ওপর নির্ভরশীলতা কাটাতে হবে। মাস্কের উদ্ভট আচরণের কারণে অনেক বিজ্ঞাপনদাতাই এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ফলে টুইটারের রাজস্ব আয় কমে গেছে।

সেই ক্ষতি পোষাতে ‘টুইটার ব্লু’-এর সাবস্ক্রিপশন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন মাস্ক। অর্থাৎ নীল টিকচিহ্নযুক্ত অ্যাকাউন্ট পেতে হলে মাশুল দিতে হবে। মাস্ক বারবারই বলেছেন, তিনি চান না, টুইটার বিনা মূল্যে ব্যবহারের প্ল্যাটফর্ম হোক। খবর রয়টার্সের।

গত বছরের শুরুর দিকে টুইটারের ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কেনেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তখন থেকেই গুঞ্জন ছিল, তিনি পুরো টুইটার-ই কিনে নেবেন। শেষমেশ সেই গুঞ্জন সত্যি হয়।

মাস্ক টুইটারের পূর্ণাঙ্গ মালিকানা কিনে নিতে ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দেন। এ নিয়ে টুইটারের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মাস্কের দফায় দফায় বৈঠক হয়। টুইটারের পর্ষদ প্রথমে মাস্কের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও পরবর্তীকালে মেনে নেয়। এরপর গত বছরের অক্টোবর মাসে ইলন মাস্ক টুইটারের দায়িত্ব নেন।

মাস্ক দায়িত্ব নেওয়ার পরই ছেঁটে ফেলেন টুইটারের তৎকালীন সিইও পরাগ আগরওয়ালকে। এরপর আরও হাজারখানেক কর্মী ছেঁটে ফেলেন তিনি। যাঁদের ছাঁটাই করা হয়নি, তাঁরাও আত্মসম্মান বজায় রাখতে টুইটার ছাড়েন। তথ্যানুসারে, সফটওয়্যার প্রকৌশলী, ডেভেলপার, কোডার—এই শ্রেণির মানুষেরা দলে দলে চাকরি ছেড়েছেন। কিন্তু এত মানুষের বদলি কর্মী তো আর রাতারাতি পাওয়া যাবে না। বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছিলেন, এতে টুইটারের ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারে। শেষমেশ সেই আশঙ্কাও সত্যি হয়।

মাস্কের এসব পাগলামিতে অনেক ব্যবহারকারী টুইটার ছেড়ে যান। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের কাছে আশঙ্কার খবর হলো, সাধারণ ব্যবহারকারীরা টুইটার ছাড়লেও ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে ফিরেছেন। সেই সঙ্গে মাস্ক দায়িত্ব নেওয়ার পর টুইটারে ঘৃণা ভাষ্যের প্রচার বেড়েছে, এমন অভিযোগও আছে।

এসবের ধারাবাহিকতায় মাস্ক সর্বশেষ যা করেছেন, তা হলো, টুইটারে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচারে যে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা শিথিল করা। ফলে টুইটার যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ডানপন্থী জনতুষ্টিবাদীদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে না, তা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই।