সবজির দাম কমছে, ক্রেতাদের স্বস্তি

সবজিছবি: প্রথম আলো

এখন শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকেরা এখন একযোগে সবজি তুলছেন। এ কারণে রাজধানীসহ বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, ফলে কমছে দাম।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুই-তিন সপ্তাহ আগেও বাজারে পেঁয়াজ, আলু, টমেটো বেশ চড়া দামে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু সরবরাহ বাড়ায় এসব পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। অন্যান্য সবজি আরও কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুরগি, ডিম ও মাছের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেক

বাজারে এখন পুরোনো পেঁয়াজের সরবরাহ একেবারে কম। তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে মৌসুমের নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসছে। শুরুর দিকে কয়েক দিন প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল, এরপর দাম কমতে থাকে। গতকাল প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। অর্থাৎ পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেক কমেছে।

পেঁয়াজের পাশাপাশি কমেছে আলুর দামও। বাজারে এখন পুরোনো আলুর সরবরাহ নেই। কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন আলুই বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের নতুন আলু বাজারে আসার পর এর কেজি ছিল ১০০ টাকার ওপরে। এখন সেই দাম কমে ২০ থেকে ২৫ টাকা হয়েছে। গত এক সপ্তাহেই আলুর দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা কমেছে।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এক কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহেও এমন দামেই মরিচ বিক্রি হয়েছিল, তবে এর আগে মরিচের কেজি ১০০ টাকার ওপর ছিল।

সবজির দামেও স্বস্তি

মাস দেড়েক আগেও সবজির বাজার বেশ চড়া ছিল। ওই সময় বেশির ভাগ সবজির কেজি ছিল ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। তবে বর্তমানে অধিকাংশ শীতকালীন সবজি ৫০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে। তবে মৌসুম নয়, এমন কিছু সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা রয়েছে।

বর্তমানে বেশি সরবরাহ রয়েছে এমন কিছু শীতকালীন সবজি হচ্ছে টমেটো, শিম, মুলা, শালগম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলি। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সবজির দোকানগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির শিম পাওয়া যাচ্ছে। ধরনভেদে এসব শিমের দাম কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা। গ্রীষ্ম মৌসুমে দীর্ঘসময় ১২০ টাকার বেশি দামে বেগুন বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া মুলা, শালগম ও পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে বড় আকারের ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলির সরবরাহ বেড়েছে। প্রতি পিছ ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০ থেকে ৪০ টাকা এবং ব্রকলি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কেনা যায়। করলা, পটোল, বরবটি, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল প্রভৃতির দাম অবশ্য চড়া। এসব সবজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়।

গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা এবং প্রতি ডজন ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন ধরনের মাছ, গরুর মাংস, চালসহ বেশির ভাগ মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে সবজির দাম কমায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা আব্বাস আকন্দ জানান, শীতের সবজির দাম কম থাকায় বেচাকেনা বেশি হয়। এতে তাদের লাভও বেশি থাকে। আর আদাবর এলাকার বাসিন্দা মাহফুজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের আয় কম। তাই সবজির দাম কমলে আমরাও একটু ভালো থাকতে পারি।’