ভোক্তাকে চাপে না ফেলে রাজস্ব বাড়ানোর পরামর্শ

বাজেট

আসন্ন বাজেটে ভোক্তার ওপর চাপ সৃষ্টি না করে রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে ভলান্টারি কনজ্যুমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটি (ভোক্তা)। একই সঙ্গে বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট-পূর্ব প্রস্তাব ও ১৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরে ভোক্তা। সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তার পক্ষে বক্তব্য দেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভোক্তার চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন, পরিচালক লুৎফর রহমান, লতিফুল বারী, মহসীনুল করিম, সাইদুল আবেদীন, মিজানুর রহমান, ফজলুল হক, নূরুন নবী, গোলাম কবীর প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তার নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছরে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে দেশে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে; একই সঙ্গে কমেছে মানুষের আয়। কতিপয় অনৈতিক ব্যবসায়ীর কারসাজিতে বাজারের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে; এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ নাজুক হয়ে পড়েছে।

খলিলুর রহমান আরও বলেন, কৃষিপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রতিরোধে কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে সরাসরি খুচরা বাজারে পণ্য বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের চাপ সত্ত্বেও কৃষি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বহাল রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

যেসব সুপারিশ করেছে ভোক্তা

বাজেটের আগে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে ভোক্তা। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দ্রব্যমূল্য কমিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা; সে জন্য চাল, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের আমদানি শুল্ক ও মূসক সহনীয় পর্যায়ে রাখা। বিলাসদ্রব্যসহ ধনীদের ব্যবহার্য পণ্যে শুল্ক-কর বৃদ্ধির কথাও বলেছে ভোক্তা।
অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর ওপর তদারকি জোরদার করা ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির ভর্তুকি পণ্যের উন্মুক্ত বাজার সম্প্রসারণের পরামর্শ দিয়েছে ভোক্তা। একই সঙ্গে কর্মহীন মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীতে নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ওষুধের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়া কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাজেটে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দের ৫ শতাংশ আর স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে ভোক্তা।

ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ কমানো এবং অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান ও আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ভোক্তা। সেই সঙ্গে কালোটাকা সাদা করার বিধান বাতিলের পক্ষে তারা।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে শিল্পকারখানা পূর্ণ সক্ষমতায় চালু রাখার পরামর্শ দিয়ে সংগঠনটি আরও বলেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি ক্রয়ে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।