উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হতে সহযোগিতা করবে বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশের জন্য পাঁচ বছর (২০২৩-২৭) মেয়াদের নতুন কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক (সিপিএফ) তৈরি করছে বিশ্বব্যাংক। সিপিএফের একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করে বাংলাদেশকে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরে সহযোগিতা করবে বিশ্বব্যাংক।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ সফররত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশন) এক্সেল ভন টর্টসেনবার্গের সঙ্গে আজ শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এক বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার ও কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক। এ ছাড়া ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।

জানা গেছে, সিপিএফে যেসব খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নয়নের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সরকারি সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, আর্থিক খাতের সংস্কার, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, অবকাঠামো উন্নয়ন, ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসার এবং নারী, শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা দেওয়া ইত্যাদি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন এক্সেল ভন টর্টসেনবার্গ এবং উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিভিন্ন সময়োচিত পদক্ষেপ নিয়েছে।

আগের সিপিএফটি ছিল ২০১৬-২১ মেয়াদের। কোভিড-১৯ এসে বিশ্বব্যাংকের নতুন সিপিএফ তৈরির কাজ কিছুটা পিছিয়ে দেয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (অপারেশন) বাংলাদেশে স্বাগত জানান অর্থমন্ত্রী। অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, দুর্যোগ মোকাবিলা খাতসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে, বিশেষত করোনাকালীন বাজেট সহায়তা, কোভিড মোকাবিলা এবং কোভিড ভ্যাকসিন কেনায় অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংককে অর্থমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।

দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের আরও জোরদার ও ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন অর্থমন্ত্রী। ঢাকাকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে এবং ৫০ বছরের অংশীদারত্বকে মনে রাখতে মেগা প্রকল্পে অর্থায়নে এগিয়ে আসতেও বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ জানান তিনি।

এক্সেল ভন টর্টসেনবার্গের আগমন উপলক্ষে আগামীকাল রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক বিশেষ আলোচনা সভা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ এক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন।