মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আইএমএফের ঋণের কোনো সম্পর্ক নেই

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পাওয়ার আগ্রহ জানিয়ে বাংলাদেশ চিঠি দিয়েছে দুই সপ্তাহ হলো। এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়নি। ঋণ দেওয়ার আগে আইএমএফ কিছু শর্ত দিয়ে থাকে। আলোচনা শুরুর আগেই কি আইএমএফের জ্বালানি তেলের ভর্তুকি কমানোর সম্ভাব্য শর্ত পূরণ করে দেওয়া হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আইএমএফের কোনো কিছুর সম্পর্ক নেই।

জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ এত বাড়ানোর বিষয়ে গত রাতে প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে অর্থমন্ত্রী কথা বলেন। অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল, দেশের ইতিহাসে একসঙ্গে জ্বালানি তেলের এত দাম বৃদ্ধি আগে কখনো হয়নি, এবার কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে তো কথা বলবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। আমি কিছু বলতে চাই না।’

মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক হিসেবে সিদ্ধান্তটি নেওয়ার প্রক্রিয়ায় নিশ্চয়ই আপনিও ছিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বেই জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। আমদানি করতে হয় বলে বেড়েছে আমাদের দেশেও। আশার কথা যে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে।’

যখন বিশ্ববাজারে কমতে শুরু করেছে, তখন কেন এমন সিদ্ধান্ত। বিশ্ববাজারে আরও কমলে কি দেশেও কমাবেন—এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, কমা আরম্ভ করেছে। তবে কম দামের তেল এখনো দেশে এসে পৌঁছায়নি। যখন পৌঁছাবে, তখন নতুন করে সমন্বয়ের চিন্তা করা হবে।

হঠাৎ এত বৃদ্ধি কেন—আবার এমন প্রশ্ন করলে মুস্তফা কামাল বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধটাও তো হঠাৎ লেগেছে। এ যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব আজ ক্ষতিগ্রস্ত।

প্রায় সব জিনিসের দাম বাড়তি, সাধারণ মানুষ এমনিতেই কষ্টে আছে। ঠিক এমন সময় এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যৌক্তিক হলো কি না—এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগেই বলেছি, বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। সব দেশেই এর প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) বেশি দাম দিয়ে তেল কিনতে হয়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব থেকে কেউ বাইরে নয়, আমরাও নই।’

বিপিসি তো সাত বছরে ৪৩ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে—এ তথ্য তুলে ধরলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তা করেছে। কিন্তু এরপর তো বেশি দামে তেল কেনায় অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে বিপিসিকে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। শুধু জ্বালানি তেল নয়, বিশ্ববাজারে সব পণ্যের দামই কমতির দিকে। নিকট ভবিষ্যতে আমরা এর সুবিধা পাব।’

গত শুক্রবার ছুটির দিনে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ৮০ থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রল ৮৬ টাকা থেকে ১৩০ টাকা এবং অকটেন ৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে আপনার কোনো বক্তব্যই নেই—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় শুক্রবার রাতে একটা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বৃদ্ধির কারণ হিসেবে এতে যেসব যুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেগুলোই আমার কথা।’