যেখানে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবেই

আগে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকলেই প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নানা ধরনের সেবা পাওয়া যেত। এখন শুধু টিআইএন থাকলেই কাজ হবে না, আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণপত্রও জমা দিতে হবে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সাধারণ বা বিশেষ আদেশ জারি করে যেকোনো ব্যক্তিকে প্রমাণপত্র দাখিল থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে।

প্রমাণপত্র বলতে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত রিটার্নের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র বা করদাতার নাম, টিআইএন বা করবর্ষ সংবলিত সনদ। এ ধরনের সনদ সিস্টেম জেনারেটেড সনদ হিসেবেও পরিচিত। এ ছাড়া করদাতার নাম, টিআইএন বা করবর্ষ উল্লেখ করে উপ–কর কমিশনারের পক্ষ থেকে করদাতাকে দেওয়া প্রত্যয়নপত্রও রিটার্নের প্রমাণপত্র হিসেবে গ্রহণ করা হবে।

গত ১ জুলাই থেকে ৩৮টি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে এখন রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র লাগবে। কেউ হয়তো ভাববেন রিটার্নের প্রমাণপত্র বানিয়ে জমা দেবেন, সেটা এখন আর সম্ভব হবে না। কারণ, রিটার্নের কপি জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়কর বিভাগ রিটার্ন জমার তথ্য অনলাইনে আপডেট করে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার তথ্য যাচাই করবে। যদি কোনো কারণে যাচাই না হয় তাহলে উপ–কর কমিশনার ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড করতে পারবেন।

যেসব ক্ষেত্রে রিটার্নের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

  • কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ;

  • কোনো কোম্পানির পরিচালক বা উদ্যোক্তা শেয়ারধারী হতে হলে;

  • আমদানি নিবন্ধন সনদ ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;

  • সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে;

  • সমবায় সমিতির নিবন্ধন গ্রহণে;

  • সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার হতে এবং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে;

  • সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ১০ লাখ টাকার জমি, ভবন বা ফ্ল্যাট বিক্রয় বা হস্তান্তর বা বায়নানামা বা আমমোক্তারনামা নিবন্ধন করতে;

  • ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও বহাল রাখতে;

  • মুসলিম আইন অনুযায়ী, নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;

  • বাণিজ্য সংগঠন বা পেশাজীবী সংস্থার সদস্য পদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে হলে;

  • আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে;

  • পোস্ট অফিসে পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়ী হিসাব খোলার ক্ষেত্রে;

  • ১০ লাখ টাকার বেশি ঋণ ব্যাংক হিসাব খোলা ও বহাল রাখতে হলে;

  • পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম, আয়কর আইনজীবী